Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

এলাকা ধরে পূর্ণ লকডাউন

শহরের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসন আগেই রিপোর্ট পাঠিয়েছিল নবান্নে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে রাজ্য সরকারের তরফে জেলাশাসকের কাছে নির্দেশিকা পৌঁছয়: করোনা সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর করতে হবে।

অনিয়ম: ব্যারিকেড পেরিয়ে অবাধ যাতায়াত। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির নিউ সিনেমা রোডে। ছবি: বিনোদ দাস

অনিয়ম: ব্যারিকেড পেরিয়ে অবাধ যাতায়াত। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির নিউ সিনেমা রোডে। ছবি: বিনোদ দাস

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

রোজই করোনা ছড়িয়ে পড়া আর মৃত্যুর খবর। কী ভাবে এই সংক্রমণ রোধ করা যাবে, তা নিয়ে রীতিমতো চাপে ছিল জেলা প্রাশসন ও স্বাস্থ্য দফতর। রাজনৈতিক ভাবে তো বটেই, শিলিগুড়ির জনগণের একটা বড় অংশ চাইছিল, পূর্ণ লকডাউন হোক পুর এলাকায়। বা অন্তত এলাকা ধরে পূর্ণ লকডাউন। শেষ পর্যন্ত যাবতীয় দ্বিধা কাটিয়ে এলাকাভিত্তিক পুরোপুরি লকডাউনের পথেই হাঁটতে চলেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর পড়েছে।

শহরের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসন আগেই রিপোর্ট পাঠিয়েছিল নবান্নে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে রাজ্য সরকারের তরফে জেলাশাসকের কাছে নির্দেশিকা পৌঁছয়: করোনা সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর করতে হবে। সেই মতো শিলিগুড়ি শহরে বিভিন্ন ওয়ার্ড নিয়ে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়। জেলাশাসক এস পুন্নম বলম বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো শহরের কোন এলাকাগুলিতে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে, তা শীঘ্রই জানানো হবে।’’ বর্তমানে যে সমস্ত কনটেমেন্ট জ়োন রয়েছে, সেগুলিকে প্রয়োজন মতো লকডাউনের অধীনে আনা হতে পারে। রাজ্য সরকারের তরফেই জানানো হয়েছে, ওই সমস্ত এলাকায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স, ব্যবসায়িক কাজকর্ম, কল-কারখানা, সরকারি, বেসরকারি অফিস সমস্তই বন্ধ থাকবে। কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে ছাড় থাকবে।

শিলিগুড়ি শহরকে বাঁচাতে সম্পূর্ণ লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে বলে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠক করে জানান করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়। গত শনিবার উত্তরকন্যায় বিভিন্ন জনের মতামত চাইতে বৈঠক ডাকা হয়। মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, দার্জিলিঙের জেলাশাসক, পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলরদের একাংশ, বিভিন্ন এলাকা থেকে তৃণমূলের অনেকে নেতানেত্রীকে সমাজসেবী হিসেবে ডাকা হয়। স্বাস্থ্যের কারণে ওই ডাকা হয়নি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে। সেখানে অবশ্য কেউই সম্পূর্ণ লকডাউন তো পরের কথা, এলাকা ভিত্তিক লকডাউন নিয়েও আলোচনা করেননি। তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা পরদিন শিলিগুড়িকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লকডাউনের আর্জি জানান। তার পরেই শাসকদলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়। চাপে পড়ে প্রশাসনও। সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব দার্জিলিঙের জেলাশাসক এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে পরিস্থিতি জানতে চান। জেলা প্রশাসন থেকে এলাকাভিত্তিক পূর্ণ লকডাউনের প্রস্তাব রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই মালদহ এবং ডালখোলা লকডাউনের পথে হেঁটেছে। চাপ তাই বাড়ছিলই। শেষ পর্যন্ত এ দিন রাতে এলাকভিত্তিক লকডাউনের কথা জানায় প্রশাসন। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘সংক্রমিত বিভিন্ন ওয়ার্ড নিয়ে এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা হবে। প্রশাসনের তরফে তা জানানো হবে।’’ অন্য দিকে সাংসদ রাজু বিস্তা শিলিগুড়ি শহরকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এ দিন চিঠি দেন। বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতেও অনুরোধ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE