Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গুরুং কবে আসছেন, প্রশ্ন পাহাড়ে

২০১৭ সালের গণ্ডগোলের পর থেকেই আত্মগোপন করে থাকা মোর্চা সভাপতিকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। একসময়ের সহকর্মী বিনয় তামাংয়ের উত্থানে বিমল যুগের অবসান ঘটেছে বলেও দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অনেক তৃণমূল নেতাদের।

গোপন-ডেরায়: ভোটের ফলের পরে। সোশ্যাল সাইট থেকে পাওয়া

গোপন-ডেরায়: ভোটের ফলের পরে। সোশ্যাল সাইট থেকে পাওয়া

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০৭:৫০
Share: Save:

দুই আসনে জয়ের পরে পাহাড়ের বিজেপি সভাপতি মনোজ দেওয়ান তাঁকে ‘চাণক্য’ আখ্যা দিয়েছেন। সশরীর না থাকলেও, ভোটের লড়াইয়ে অন্য নেতাদের মতোই তিনি ছিলেন সমান সক্রিয়। অনুগামীদের মতে, গোপন আস্তানা থেকে তাঁর কষা ছকেই বাজিমাত করেছে পদ্ম শিবির। তিনি বিমল গুরুং।

২০১৭ সালের গণ্ডগোলের পর থেকেই আত্মগোপন করে থাকা মোর্চা সভাপতিকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। একসময়ের সহকর্মী বিনয় তামাংয়ের উত্থানে বিমল যুগের অবসান ঘটেছে বলেও দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অনেক তৃণমূল নেতাদের। দুই নেতার শিবির বদলে মোর্চার ভোট ভাগভাগি হয়ে যাবে বলেও নিশ্চিত ছিলেন তাঁরা। তাঁর সঙ্গে পাহাড়ের মানুষ আছে কি নেই, সেটা প্রমাণ করতে বিমলের প্ল্যাটফর্ম ছিল লোকসভা ভোট ও বিধানসভা উপনির্বাচন। দুই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পরে এ বার কি তিনি পাহাড়ে ফিরবেন? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র।

বিমলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে পাহাড় জুড়ে নানা মুনির নানা মত সামনে এসেছে। জয়ের পর নবনির্বাচিত সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘পাহাড় বিমল গুরুংয়ের জন্য অপেক্ষা করে আছে। আশা করি, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে শীঘ্রই তিনি পাহাড়ে ফিরবেন।’’ জয়ের জন্য বিমলের অবদানের কথাও বারবার উল্লেখ করেন তিনি। মনোজ দেওয়ান বলেন, ‘‘আমরা বিমলকে পাহাড়ে ফেরাব। পাহাড়ে ওঁর প্রয়োজন আছে।’’ দুই বিজেপি নেতার বক্তব্য, বিমলের পাহাড়ে ফেরা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দার্জিলিঙের নবনির্বাচিত বিধায়ক নীরজ জিম্বার মত, ‘‘আমি বিমল ভাইকে নিয়ে দার্জিলিঙে সভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব।’’ মন ঘিসিংও জানিয়েছেন, বিমলের সঙ্গে মিলে পাহাড়ের উন্নয়নে কাজ করতে চান তাঁরা।

যদিও তাঁর অনুগামীদের অনেকেই মনে করছেন, আইনি জটিলতা এড়িয়ে এখনই বিমলের পক্ষে পাহাড়ে ফেরা খুব সহজ নয়। আবার বিমল ফিরলে পাহাড়ে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কাও করছেন অনেকে। সূত্রের খবর, ২০২১ সালে বিমলকে বিধানসভায় পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে ঘুঁটি সাজাচ্ছে মোর্চা। বিমলপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাই বলেন, ‘‘স্বমহিমায় বিমল গুরুং পাহাড়ের ফিরবেন। আমরা তাঁর অভ্যর্থনায় রাজকীয় আয়োজন করব। রোশন গিরি-সহ আমাদের অন্য নেতারাও পাহাড়ে আসবেন। কিছু দিনের মধ্যেই পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যাবে।’’

বিমল পাহাড়ে ফিরলে বিরোধিতা করবেন? বিনয় বা অনীত থাপা কেউই এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি। এদিন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জিটিএ বোর্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি তোলেন রোশন গিরি। ‘হোয়াটঅ্যাপ কলিংয়ে’ তিনি বলেন, ‘‘বিমল গুরুংকে নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আমরা পাহাড়ে ফিরব। পাহাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে যাঁরা বেইমানি করেছেন, তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন জনতা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE