Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

টাকা দিলেই ভর্তি! ডেকে এনে হয়রানি

মেসেজে উল্লেখ থাকা একটি মোবাইল নম্বরে ফোন করে স্নিগ্ধা বুঝতে পারেন কোনও বেসরকারি সংস্থা থেকে তাঁকে ওই মেসেজ পাঠানো হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

দিনকয়েক আগে শীতলখুচি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী স্নিগ্ধা মজুমদারের (নাম পরিবর্তিত) মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে নার্সিংয়ে ভর্তির কাউন্সিলিংয়ের জন্য তাঁকে শিলিগুড়ি আসতে বলা হয়। এ বছরই উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন স্নিগ্ধা। নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেছিলেন। রাজ্যওয়ারি মেধা তালিকায় তাঁর নামও ওঠে। ভর্তির জন্য কাউন্সিলিং হওয়ার কথা ছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ক্যাম্পাসের নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। মেসেজ দেখে উচ্ছ্বসিত স্নিগ্ধা বাবাকে নিয়ে তিন দিন আগে হাজির হয়েছিলেন মেডিক্যালে। কিন্তু এসে জানতে পারেন সেখানে কোনও কাউন্সিলিং নেই।

এরপর মেসেজে উল্লেখ থাকা একটি মোবাইল নম্বরে ফোন করে স্নিগ্ধা বুঝতে পারেন কোনও বেসরকারি সংস্থা থেকে তাঁকে ওই মেসেজ পাঠানো হয়েছে। ইস্কন মন্দির রোডে ওই সংস্থার বলা ঠিকানাতেও গিয়েছিলেন স্নিগ্ধা ও তাঁর বাবা। অভিযোগ, সেখানে তাদের পছন্দের নার্সিং প্রশিক্ষণ কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা টাকা দাবি করা হয়। সেই সব শুনে কোনও টাকা না দিয়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। অনলাইন ফর্ম ফিলাপের সময় যে মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছিল তা ওই সংস্থার হাতে গেল কী ভাবে সেই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে স্নিগ্ধা ও তাঁর বাবাকে।

স্নিগ্ধার মতো একই অভিজ্ঞতা হয়েছে ফালাকাটার বুল্টি নস্কর, ডাবগ্রামের সুনীতা পাল, ধুপগুড়ির সোনামনি বর্মণের। তাদের কাছেও মেসেজ পাঠিয়েছিল শিলিগুড়ির ইস্কন মন্দির রোডের ওই সংস্থা। ওই সংস্থা মোবাইল নম্বর কী ভাবে পেল সেই প্রশ্ন তুলেছেন বুল্টি, সুনীতারাও। ভর্তির সুযোগ করিয়ে দেওয়ার নাম করে তবে কী বড়সড় কোনও প্রতারণা চক্র তৈরি হয়েছে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য আবেদনকারি ছাত্রীদের অভিভাবকদের মনে। একই পদ্ধতিতে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির নাম করে বেছে বেছে আবেদনকারিদের ফোন বা মেসেজ করার অভিযোগও উঠেছে। বুল্টির দাদা সন্দীপ নস্কর বলেন, ‘‘ওরা জানান টাকার বদলে কোনও রসিদ দেবে না। তাতেই সন্দেহ হয় আমাদের। প্রথমে ভেবেছিলাম পুলিশে অভিযোগ জানাব। তবে অন্যরা ঝামেলায় জড়াতে রাজি না হওয়াতে আমরাও আর যাইনি।’’

সংস্থার দফতরে গেলে কেউ কথা বলতে চাননি। মোবাইল নম্বর কোথা থাকে পাচ্ছেন? নিজেকে আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘ওটা টপ সিক্রেট। বলা যাবে না।’’ শিলিগুড়ি পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’ এলাকার কাউন্সিলার সত্যজিৎ অধিকারি বলেন, ‘‘সংস্থার দফতরে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেব। কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE