Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

লিঙ্কের বিলম্বে দেরি গৌড় এক্সপ্রেসে

বালুরঘাট-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন নির্ভর করে ওই লিঙ্ক ট্রেন চলার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার বালুরঘাটের সঙ্গে মালদহের যাত্রীরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
Share: Save:

পৌঁছনোর একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে ঠিকই। কিন্তু কখন যে পৌঁছবে, কেউ জানে না। দেরি করে মালদহ স্টেশনে পৌঁছনোই যেন দস্তুর দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট গৌড়লিঙ্ক ট্রেনের।

বালুরঘাট-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন নির্ভর করে ওই লিঙ্ক ট্রেন চলার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার বালুরঘাটের সঙ্গে মালদহের যাত্রীরাও। কেননা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসটি শিলিগুড়ি থেকে নির্ধারিত বিকেল সাড়ে ৪টার বদলে হামেশা এক-দু’ঘন্টা দেরিতে বালুরঘাট স্টেশনে পৌঁচচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

ফলে রোজ রাতে মালদহ স্টেশনে যাত্রীঠাসা মূল গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি হা পিত্যেস করে দাঁড়িয়ে থাকে কখন বালুরঘাট থেকে লিঙ্ক ট্রেনটি মালদহ স্টেশনে আসবে। কিন্তু নির্ধারিত রাত সাড়ে ৯টার বদলে কোনও দিন প্রায় দু থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে মালদহে স্টেশনে পৌঁছনোর পর মূল গৌড়ের সঙ্গে লিঙ্কটি জুড়ে দিয়ে গভীর রাতে কলকাতার শিয়ালহ স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে। বুধবার এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হলেন গৌড় এক্সপ্রেসের বহু যাত্রী।

সংশ্লিষ্ট উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ওই সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বালুরঘাট রেল উন্নয়ন কমিটি প্রতিনিধিরা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। গৌড় এক্সপ্রেসের অনেক যাত্রী অভিযোগ করেন, রাতে ট্রেনটিতে চেপে নির্ধারিত ভোর ৬টা নাগাদ শিয়ালদহে পৌঁছে সময়ে অফিস যাওয়া থেকে বিভিন্ন জরুরি ও প্রয়োজনীয় কাজকর্মের সুবিধা ও সুযোগ হত।

২০০৪ সালে বালুরঘাটে ট্রেন চালুর পর থেকে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের উপর নির্ভর করেই বালুরঘাট স্টেশন থেকে চলে গৌড়লিঙ্ক। ফলে ইন্টারসিটি বালুরঘাটে দেরিতে পৌঁছনোয় গৌড়লিঙ্ক ট্রেনের যাত্রীদেরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর দেরিতে মালদহ স্টেশনে পৌঁছে অনেক ক্ষেত্রে মালদহের মূল গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধরতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের বাসিন্দা এক যাত্রী সন্তু দাস, প্রকাশ রায় বলেন, কোনও কোনও দিন গভীর রাতে লিঙ্ক পৌঁছনোর খবর পেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর মালদহ থেকে মূল গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে চলে যায়। এরপর বেশি রাতের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে গৌড়লিঙ্ক ট্রেনের বগি জুড়ে দেওয়া হয়। শিয়ালদহ পৌঁছতে বেলা হয়ে যায়।

বালুরঘাট থেকে রোজ বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ মালদহ অভিমুখে রওনা হয় গৌড় লিঙ্ক ট্রেন। রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে মালদহ স্টেশনে পৌঁছে মূল গৌড় এক্সপ্রেসের সঙ্গে লিঙ্ক ট্রেনটি যুক্ত হয়ে রাত ৯টা ৩৫ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় সারণি ধার্য ছিল।

কিন্তু শিলিগুড়ি-বালুরঘাট ইন্টারসিটি বিকেল সাড়ে ৪টের বদলে রোজ সন্ধে পার করে এক থেকে দু ঘন্টা লেটে বালুরঘাট স্টেশনে এসে পৌঁছচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে ওই ট্রেনের ইঞ্জিনের উপর নির্ভর করে চলা বিকেলের গৌড় লিঙ্ক ট্রেনটি বালুরঘাট থেকে ছাড়তে দেরি হচ্ছে। তার উপর একলাখি স্টেশনে অনেক ক্ষেত্রে ট্রেনের ভিড়ে আটকে পড়ছে গৌড়লিঙ্ক।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় রোজই ইন্টারসিটি বুনিয়াদপুরে বিকেল সোয়া ৪টা নাগাদ পৌঁছে সেখান থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরের বালুরঘাট স্টেশনে পৌঁছতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। অথচ বুনিয়াদপুর-বালুরঘাট স্টেশনের মধ্যে লাইনে কোনও ক্রসিং কিংবা সিগন্যালিং ব্যবস্থা নেই। তবে কী করে ৩৫ মিনিটের পথ পৌঁছতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে, প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে একলাখি-বালুরঘাট রেল উন্নয়ন সমিতি। এর বিরুদ্ধে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষর কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gour Express Delay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE