Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বালুরঘাটে ধৃত সরকারি কর্মী

ঋণগ্রহীতাদের জমা দেওয়া কিস্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের জেলা কালেকটরেটের সার্টিফিকেট বিভাগের এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০১:৪১
Share: Save:

ঋণগ্রহীতাদের জমা দেওয়া কিস্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের জেলা কালেকটরেটের সার্টিফিকেট বিভাগের এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে বালুরঘাটের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখা থেকে অভিযুক্ত সরকারি কর্মীকে বিশ্বজিত দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে জালিয়াতি(৪২০) এবং টাকা আত্মসাতের(৪০৯) অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। শনিবার বালুরঘাট আদালতে পেশ করা হলে ধৃতকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকারি সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কে গিয়ে কিস্তির টাকা জমা না দিয়ে সংশ্লিষ্ট স্লিপে ব্যাঙ্কের সিলমোহর মেরে অভিযুক্ত বিশ্বজিতবাবু চলে আসতে গেলে বিষয়টি ধরে ফেলেন ওই ব্যাঙ্কের পার্সোন্যাল বিভাগের ম্যানেজার প্রশান্ত সাহা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এ দিন বিভাগীয় তদন্তে গিয়ে এক সরকারি আধিকারিক জানতে পারেন বিগত প্রায় ৫ মাস যাবত ঋণগ্রহীতাদের কিস্তির কোনও টাকাই ব্যাঙ্কে জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। অথচ ডিপোজিট স্লিপে ব্যাঙ্কের সিলমোহর রয়েছে।

বালুরঘাট থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, বালুরঘাট কালকটরেটের সার্টিফিকেট সেকশনে কর্মরত ধৃত কর্মী বিশ্বজিতবাবু দীর্ঘ প্রায় ১৫-২০ বছর ধরে চাকরি করছেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সার্টিফিকেট জমা দিয়ে বেকার যুবক যুবতীরা ঋণ নেন। কিস্তি খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিত করে ঋণের টাকা আদায়ের জন্য সরকারি প্রক্রিয়া করে শর্তসাপেক্ষে তাদের কিস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এবং টাকার পরিমাণ কমিয়ে আদায় করা হয়। ওই কিস্তির টাকা বিশ্বজিতবাবু দফতরে বসে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা দেন। ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার ডিপোজিট স্লিপ দফতরের আধিকারিককে দেখিয়ে ফাইলে নথিভুক্ত করে রাখেন। কিন্তু ডিপোজিট স্লিপে ব্যাঙ্কের সিল থাকায় তিনি টাকা জমা দিয়েছেন প্রমাণ রাখলেও আদতে তিনি টাকাই জমা দিতেন না বলে অভিযোগ ওঠায় বড় ধরণের দুর্নীতির আঁচ পেয়ে পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। ওই অনিয়মের পিছনে সংশ্লিষ্ট কোনও ব্যাঙ্ক কর্মী জড়িত আছেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আইসি জানিয়েছেন।

ব্যাঙ্ক ম্যনেজার প্রশান্তবাবুর কথায়, দুই ঋণগ্রহীতার একজনের দেয় কিস্তির ৫০০টাকা এবং অপর জনের ১০০০টাকা মোট দেড় হাজার টাকা জমা দিতে অভিযুক্ত কর্মী টিফিনের সময় ব্যাঙ্কে ঢোকেন। দীর্ঘদিন ধরে একই কাজ করার ফলে ব্যাঙ্কের মধ্যে তার অবাধ যাতায়াত ও কর্মীদের সঙ্গে পরিচিতি ছিলই। সেই সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত ওই সরকারি কর্মী কাউন্টারে হাত ঢুকিয়ে টাকা জমা দেওয়ার ডিপোজিট স্লিপে সিলমোহর মেরে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

এ দিন অভিযুক্ত বিশ্বজিতবাবুর আইনজীবী মন্মথ ঘোষ দাবি করেন, ওই সার্টিফিকেট ঋণের কিস্তির টাকা নির্দিষ্ট একটি অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। বিশ্বজিতবাবু কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাঙ্কের কাউন্টারে থাকা কর্মীকে সাহায্য করতেই সিল মেরে দেন। তার বিরুদ্ধে আত্মসাত ও জালিয়াতির অভিযোগ ঠিক নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balurghat Government Employee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE