Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Panchanan Barma University

উদ্বেগের সমাবর্তন

সকাল থেকেই তোড়জোড় চলছিল মঞ্চ সাজানোর। দফায় দফায় অনুষ্ঠানের মহড়াও। তার মধ্যেই এল রাজ্যপাল তথা আচার্যের শোকজ় বার্তা।

চিন্তিত: দেবকুমার মুখোপাধ্যায়।

চিন্তিত: দেবকুমার মুখোপাধ্যায়।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩৯
Share: Save:

সকাল থেকেই তোড়জোড় চলছিল মঞ্চ সাজানোর। দফায় দফায় অনুষ্ঠানের মহড়াও। তার মধ্যেই এল রাজ্যপাল তথা আচার্যের শোকজ় বার্তা। কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে আধিকারিকদের মধ্যে। তবে ওইটুকুই। সমাবর্তনের প্রস্তুতিতে আঁচ পড়ল না। উপাচার্য জানালেন, সমাবর্তন হচ্ছে।

সবকিছু ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবার কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার শোকজ়ের খবরের পরেও নিস্তরঙ্গ রইল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ। তার আগের দিন, বুধবারই সমাবর্তনে তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলে জানিয়ে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ দিন তিনি শোকজ় করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়কে। এমনকি, উপাচার্য়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও তুলেছেন তিনি। উপাচার্য পদে দেবকুমার বহাল থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় এ দিন দাবি করেন, পদ্ধতি মেনেই নির্দিষ্ট সময়ে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে কোনও সাড়া না পেয়ে তাঁরা আমন্ত্রণপত্র ছাপেন। অনুমতি না পাওয়ার জন্যেই আচার্যের নাম আমন্ত্রণপত্রে রাখা যায়নি। তিনি বলেন, “শোকজ়ের জবাব অবশ্যই দেব। এটুকু বলতে পারি, আমরা কোনও ভুল করিনি। সময় মেনেই আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর পরেও রাজ্যপাল তথা আচার্য যা জানতে চাইবেন তা জানাব।”

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। ইতিহাস বিভাগের ছাত্র তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা উত্তম ঘোষ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যপাল তথা আচার্যকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আসলে রাজ্যপালের যা ভূমিকা, তাতে তাঁর হাত থেকে কেউ শংসাপত্র নেবেন কি না তা নিয়েই চিন্তিত হয়েই কোনও উত্তর দেননি। এখন বিতর্ক তৈরির জন্যই এমন কথা বলছেন।” অন্যদিকে, এবিভিপির কোচবিহার জেলা প্রমুখ অনিরুদ্ধ দে সরকার বলেন, “পুরোপুরি অসাংবিধানিক কাজ হয়েছে। রাজ্যপালকে এ ভাবে অসম্মান করা হচ্ছে বারবার।”

১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসে। তাতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের চার মন্ত্রীর নাম থাকলেও রাজ্যপালের নাম ছিল না। তা নিয়েই বিতর্ক হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করে, আচার্যকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি উত্তর দেননি। তার পরেই রাজ্যপাল টুইট করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বাজেট অধিবেশনের কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সমাবর্তনে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। অনেকেরই ধারণা, বিতর্ক এড়াতেই পার্থ সমাবর্তন এড়াচ্ছেন।

এই বছর থেকেই পঞ্চানন বর্মা স্মারক সম্মান দেবে বিশ্ববিদ্যালয়। এবারে এই সম্মান পাচ্ছেন প্রসেনজিৎ বর্মণ। প্রাক্তন সাংসদ প্রসেনজিতের সামাজিক অবদানের কথা মাথায় রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি তাঁকে ওই সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE