পরিদর্শনে চন্দনা সরকার।নিজস্ব চিত্র
বানভাসিদের উদ্ধার ও যাতায়াতের জন্য ব্লক প্রশাসনের তরফে দেওয়া নৌকো ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই। প্রশাসনিক সূত্রেই খবর, গঙ্গায় প্লাবিত পারদেওনাপুর পঞ্চায়েতে আটটি নৌকো সরকারি ভাবে দেওয়া হয়েছে কালিয়াচক ৩ ব্লক প্রশাসনের তরফে। অভিযোগ, এর মধ্যে চারটি নৌকো বানভাসিদের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকি চারটি ব্যবহার করছেন প্রধান থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সদস্যরাই। এ নিয়ে বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
পারপরাণপাড়া গ্রামের একাধিক বানভাসি বলেন, ‘‘পারপরাণপাড়ার প্রতিটি ঘরে এক কোমর জল। লুটপাটের ভয়ে ত্রাণ শিবিরে না গিয়ে ঘরেই মাচা করে থাকছেন সকলে। অনেক পরিবারের নিজের নৌকো না থাকায় বাজার ও দৈনন্দিন কাজে বাড়ির বাইরে যেতে পারছে না।’’
প্রশাসনের তরফেই জানানো হয়েছিল যে, যাতায়াতের সুবিধায় একটি নৌকো গ্রামে দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি ভাবে কোনও নৌকো বাসিন্দাদের জন্য পাঠানো হয়নি। বানভাসিরা সুবিধা না পেলেও পঞ্চায়েত-প্রধানরা কিন্তু সরকারি নৌকাতেই বাড়ি-পঞ্চায়েত অফিস যাতায়াত করছেন।
কালিয়াচক ৩ ব্লকের বিডিও খোকন বর্মন বলেন, “এমনটা হওয়ার তো কথা নয়। আমরা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮টি নৌকো পাঠিয়েছি। পঞ্চায়েত-প্রধানরা সরকারি নৌকা ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ আসেনি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রধান সুস্মিতা রবিদাস অবশ্য বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। বেশির ভাগ নৌকোই বাসিন্দাদের যাতায়াতে দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিলি ও উদ্ধার কাজের জন্য দু’টি নৌকো পঞ্চায়েতে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিও কাজে লাগনো হবে।’’
এ দিকে গঙ্গার জলস্তর ক্রমশ বেড়েই চলেছে। চরম বিপদসীমার আরও কাছাকাছি চলে এসেছে। রবিবার বিকেলে গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৫ মিটার সোমবার তা বেড়ে হয়েছে ২৫.২ মিটার। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জল আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বানভাসিদের অভিযোগ, দিন কয়েক আগে পঞ্চায়েতের তরফে ত্রিপল, শাড়ি ও সামান্য চাল ত্রাণ হিসেবে দিলেও আর ত্রাণ মিলছে না। পানীয় জলেরও সমস্যা প্রকট।
পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ব্লক প্রশাসন থেকে এখনও ত্রাণ সামগ্রী না মেলায় ত্রাণ দেওয়া যাচ্ছে না। এ দিন বিকেলে পারদেওনাপুর পঞ্চায়েতের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি চন্দনা সরকার। নৌকো করে তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ যেন পৌঁছয় সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে জানাব।’’ মানিকচকে বাসিন্দাদের যাতায়াতে তিনটি নৌকো প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়েছে। মহানন্দার জলস্তর বাড়ায় ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহের আরও অনেক বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy