তুফানগঞ্জের বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষের জের গড়াল থানায়। শনিবার রাতে বিজেপির তুফানগঞ্জ ১ ব্লক সভাপতি পুষ্পেন সরকার তুফানগঞ্জ থানায় দলের ‘বহিষ্কৃত’ কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি বিমল সরকার, অন্যতম সম্পাদক উজ্জ্বল বসাক সহ ৯ জনের নামে লিখিত অভিযোগ জানান। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মারপিট, অবৈধভাবে প্রবেশ, ভাঙচুর সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিমলবাবুর অনুগামীরাও রবিবার তুফানগঞ্জ থানায় দলের তুফানগঞ্জ ১ ব্লক কমিটির এক নেতা সহ ৮ জনের নামে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব রবিবার বলেন, “দুই পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এরই পাশাপাশি দুই শিবির পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে। তবে তুফানগঞ্জ মেন রোডে দলের মহকুমা অফিসের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন জেলা নেতৃত্বের ঘোষিত ‘বহিষ্কৃত’ নেতারাই। দলের ‘অফিসিয়াল’ গোষ্ঠীর নেতাকর্মীদের ওই অফিসে দেখা যায়নি। পুষ্পেনবাবুর দাবি, “অফিসে ঢুকলেই আমাদের মতো সাধারণ নেতাকর্মীদের বিমলবাবুর অনুগামীরা গালমন্দ করেন। কটূক্তি করা হয়। সে জন্য বেশ কিছুদিন ধরে আমার মতো অনেকেই সেখানে যাচ্ছেন না। দলের জেলা নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।” পুষ্পেনবাবুর সংযোজন, “শনিবার সভার আয়োজন আমরা করেছিলাম। কিন্তু ওই দায়িত্বে না থেকে অনেকে চাঁদা তুলেছেন। তারপরেও আমরা ভাল ভাবে সভার আয়োজন করছি দেখে ক্ষোভের জেরে বিমলবাবুরা মদত দিয়ে হামলা করান। আমরা স্বচ্ছভাবে কাজ করতে চাওয়ায় কিছু লোকের সমস্যা হচ্ছে।”
বিজেপি’র ‘বহিষ্কৃত’ কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি বিমলবাবু অবশ্য এদিনও বহাল তবিয়তে দলের মহকুমা অফিসে অনুগামীদের নিয়ে বসেন। বিমলবাবু বলেন, “পুষ্পেন দলের ব্লক সভাপতি নন, উনি জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মনের নিয়োগ করা সভাপতি। গত দুই বছরে একটি দলীয় বৈঠক ডাকেনি। অফিসেও আসেন না। এলাকার কর্মীরা সবাই এসব জানেন।” সেই সঙ্গে বিমলবাবুর তোপ, “দলের শহর কমিটির এক নেতার বাড়ি থেকে লোহার রড এনে জড়ো করে রেখে নিরীহ কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। ব্লক সভাপতি পুষ্পেন ঘটনার মদতদাতা। তা ছাড়া যারা চাঁদা তুলে নয়ছয় করেন তাঁদের মুখে স্বচ্ছতার কথা মানায় না।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আমাকে বহিষ্কারের এক্তিয়ার জেলা সভাপতির নেই।”
গোটা ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের পারদ ক্রমশ চড়ছে। অস্বস্তি বেড়েছে দলের জেলা নেতৃত্বের। জেলা সভাপতি হেমচন্দ্রবাবু বলেন, “বিমলবাবু সহ দুই জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শীঘ্র তাঁরা চিঠি পেয়ে যাবেন। তুফানগঞ্জের অফিস নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমস্যা মেটাতে আইনি পদক্ষেপ করব।”
শনিবার তুফানগঞ্জ কমিউনিটি হলে দলের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে কর্মিসভার আয়োজন করে বিজেপি। অভিযোগ ওই সভা শুরুর কয়েকঘন্টা আগে দুই শিবিরের লোকজন লোহার রড, লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উভয়পক্ষের ৫ জন জখম হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। তবে ঘটনার জেরে প্রায় ফাঁকা হলঘরে বক্তব্য রাখতে হয় সভার মুখ্যবক্তা শমীক ভট্টাচার্যকে। সভার পরে ওই ব্যাপারে প্রকাশ্যে ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশে রুজু অভিযোগ নিয়ে দুই পক্ষেরই দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy