দুর্দশা: উচ্ছেদের পরে বৃষ্টিতে আরও দুর্ভোগ বাড়ল ইসলামপুরে। ছবি: অভিজিৎ পাল
রবিবার সকাল থেকেই আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা ছিল। দুপুরে যখন অঝোরে বৃষ্টি শুরু হল বালুরঘাটে, ঘড়িতে তখন পৌনে ১টা। টানা প্রায় এক ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির পর মাঝারি বৃষ্টি চলতে থাকে। প্রায় একমাস ধরে টানা গরমের পর ছুটির বৃষ্টিতে ঠান্ডার আমেজে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা।
মাঝিয়ান কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের আবহাওয়া দফতরের নোডাল অফিসার জ্যোতির্ময় কারফরমা জানান, এ দিন বালুরঘাট এলাকায় প্রায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি আরও হবে। দুপুরে আকাশ কালো করে ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নামে বুনিয়াদপুরেও। প্রায় আধঘণ্টা মুষলধারে বৃষ্টির পরেও এক টানা চলতে থাকে। সকালে বৃষ্টি হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও হেমতাবাদের আকাশ মেঘলা ছিল। কোনও কোনও এলাকায় ঝিরঝিরে হলেও ভারী বৃষ্টি হয়নি। ইসলামপুর ও চাকুলিয়ায় এ দিন সকালে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাত থেকেই অবিরাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে ইসলামপুরে। রবিবার অনেক বেলা পর্যন্ত চলে বৃষ্টি। দুপুরের পর বৃষ্টি কমলেও মেঘলা রয়েছে আবহাওয়া। এ দিন জেলায় গরম কম অনুভূত হয়েছে। তাতে বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরে।
তবে সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি মালদহে। এ দিন দুপুরে ইংরেজবাজার শহরের বৃন্দাবনীয় ময়দানে ফুটবল নিয়ে হাজির শহরের পুড়াটুলির বাসিন্দা জিৎ দাস, ভুটু সরকারেরা। বৃষ্টির অপেক্ষাতেই ছিল তারা। ওই কিশোরদের কথায়, ‘‘বৃষ্টিতে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা। তবে বৃষ্টি হয়নি!’’ অতুল মার্কেট চত্বরে চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তাঁদের একজন বুবাই দাসও বললেন, ‘‘তীব্র গরমের পর আকাশে মেঘ দেখতে পেয়ে বৃষ্টির আশায় ছিলাম। অথচ বৃষ্টি নেই। তাই ভেজা হল না। তবে চড়া রোদ থেকে এ দিন রেহাই মিলেছে জেলাবাসীর। বাতাসও ছিল। চাঁচলেও বৃষ্টি হয়নি।’’
হাসপাতাল ভবনের পিছনের রাস্তা জলমগ্ন বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত
মুষলধারে বৃষ্টিতে বালুরঘাট, বুনিয়াদপুর, ইসলামপুর, রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়। বুনিয়াদপুরে শহরের প্রধান রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। বালুরঘাট শহরের নিচু এলাকার রাস্তা ডুবে যায়। জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের রাস্তায় এবং হাসপাতাল ভবনের পিছনে মর্গের কাছে রাস্তা-সহ গোটা চত্বর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রায়গঞ্জে সকাল থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়। হাসপাতাল চত্বর, শহরের কিছু এলাকায় কিছুটা জল জমেছে। ইসলামপুরের পুরাতন পল্লি, অপ্সরা মোড়, মেলার মাঠ, স্টেশন রোডের একাশ, লোকনাথ কলোনি-সহ বেশ কিছু এলাকায় জল জমে। বাসিন্দাদের দাবি, রাতভর বৃষ্টির জেরে নর্দমার জল উপচে উঠেছে রাস্তায়। কাজেই সেই জল দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবাল অবশ্য জানান, দিনভর বৃষ্টিতে কিছু রাস্তায় জল জমেছিল ঠিকই। বৃষ্টি কমতেই জল নেমে যায়। রায়গঞ্জের মোহনবাটী হাইস্কুলের আবহওয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূগোল শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের দাবি, তাপমাত্রা কমায় ও ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার বেগে বাতাস থাকায় এ দিন জেলায় গরম কম অনুভূত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy