১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস। ফাইল চিত্র
পাহাড়ে জুলাই মাসের বর্ষা নেমে গিয়েছে। প্রায় দিনই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। ইতিমধ্যে কার্শিয়াং এবং রোহিণীতে দু’দিন ছোট মাপের ধসে রাস্তা বন্ধের ঘটনাও ঘটেছে। কোনওমতে তা সামাল দেওয়া গেলেও যে কোনও সময় জোর বৃষ্টি শুরু হলে, বর্তমান পাহাড়ের পরিস্থিতি সামলানো হবে তা ভেবেই চিন্তায় পড়েছেন দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা প্রশাসন।
প্রতি বছর বর্ষার আগে পাহাড়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে সমন্বয়ের কাজ শুরু হয়। জিটিএ, পুরসভা, পঞ্চায়েত স্তরের অফিসারদের বৈঠক হয়। আপৎকালীন সময়ে কর্মীদের যোগাযোগের নম্বর-সহ তথ্য ভাণ্ডার তৈরি রাখা হয়। এলাকা ভিত্তিক ধস, গাছ পড়ার মত দুর্যোগের খবর মিলতেই তাঁদের কাজে নামানো হয়। সঙ্গে পূর্ত, বিদ্যুৎ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বা টেলিফোন বিভাগকে নিয়ে পরিকাঠামো, ক্রেন, পাথর সরানোর ক্রেন তৈরি রাখা হয়। এক্ষেত্রে ঠিকাদারদের প্রস্তুত থাকলে বলা হয়।
এ বার পাহাড় পরিস্থিতির জেরে কোনও কিছুই ঠিকঠাক হয়নি। তাই বর্ষায় কী হবে সেই উদ্বেগে রয়েছে প্রশাসন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বৃষ্টির কথা ভেবে সত্যিই চিন্তা হচ্ছে। জিটিও-র কেউ কাজ করছে না। অন্যত্র পরিস্থিতিও তাই। সমতল থেকে ধস সরানোর কাজের যন্ত্রপাতি, ক্রেন মালিকেরা আনতে চাইছেন না। বড় বিপর্যয় হলে কী যে হবে কে জানে!’’
এ বার সমতল থেকে ক্রেন, পাথর সরানোর মেশিন-সহ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর বা অগ্নিকাণ্ডের ভয়ে কেউ নিয়ে যেতে চাইছেন না। জেলাশাসক জানান, ইতিমধ্যে দু’দিন ধস নেমেছিল। নিজেরাই লোকজন দিয়ে পাথর সরানো হয়েছে।
গত ২০১৫ সালে জুলাই মাসে পাহাড়ে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় ধস নামে মিরিকে। ২৩ জন মারা যান। ২০১৬ সালে দুই জায়গায় ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বড় গাড়ির জন্য ৭ বছর ধরে বন্ধ। গত বছরও ৫৫ নম্বর সড়কটি ছাড়াও রোহিনী রোড, পাঙ্খাবাড়ি রোড এবং সিকিমগামী জাতীয় সডক (১০) অন্তত ১৫ জায়গায় ধস নেমেছিল। সিকিমগামী জাতীয় সডকটি রাজ্যের অংশটি সেনা বাহিনীর ‘বিআরও’ পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে। গত বছর সেবকের ধস সরাতেই সমতল থেকে যন্ত্রপাতি পৌঁছে তা পরিস্কার করতে ৩ দিন লেগেছিল।
প্রশাসনের কয়েকজন অফিসার জানান, বিআরও রাস্তাতেই যন্ত্রপাতি রাখত। এখন তা নেই। পাহাড়ে কিছু ছোট ক্রেন থাকলেও চালক নেই। আবার বর্যার আগে গার্ডওয়াল, কালভার্ট, নিকাশি নালার কাজ শুরু হলেও এখন বন্ধ। পাঙ্খাবাড়ির অবস্থা ভাল নয়। ৩-৪ দিন জোর বৃষ্টি হলে পাহাড়ের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। সেই পরিস্থিতি হলে কী হয়ে সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy