বেনিয়ম: ছটপুজোয় ফাটছে শব্দবাজি। শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ছবিটা বদলানো না ছটপুজোতেও। কালীপুজো, দীপাবলির পরে মঙ্গলবার রাতেও দেদার শব্দবাজি ফাটল শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায়। নিষিদ্ধ শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে বুধবার ভোর পর্যন্ত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছটঘাট থেকে পাড়ার অলিগলিতে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার ভোর ৪টা অবধি একটানা ফেটেছে শব্দবাজি।
কখনও তারস্বরে রকেট উড়েছে আকাশে, কখনও বিকট শব্দে ফেটেছে বিভিন্ন ধরনের পটকা। রাস্তায় লঙ্কাবাজির চেন ফাটিয়ে উল্লাসে মেতেছেন একদল যুবক। রাতভর পটকা-বাজির দাপটে বাতাসে ছড়িয়েছে দূষণও। আবহাওয়া দফতরের হিসাব অনুসারে, বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ শহরের ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’ ছিল ২০২। পরিবেশবিদদের মতে, যা খারাপ বলেই বিবেচিত হয়। বাজির আওয়াজের সঙ্গে কোথাও কোথাও পাল্লা দিয়েছে ডিজে-মিউজিকও। তার সঙ্গে চলেছে নাচগানের আসর।
বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দীপাবলিতে বাজি ফাটানোর সময় বেঁধে দেওয়া নিয়ে প্রচার করে সফল হয়নি পুলিশ-প্রশাসন। ছটপুজো ঘাট থেকে রাস্তায় সর্বত্র পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারেরা থাকলেও কাউকে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। মহানন্দার লালমোহন মৌলিক ঘাটে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় ডিজে বাজিয়ে উদ্দাম নাচ করতে দেখা গিয়েছে একদল যুবককে।
পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, বর্তমানে উদ্যোক্তাদের একাংশ উৎসবে জৌলুস বাড়াতে গিয়ে পরিবেশ দূষিত করছেন। পুজো, উৎসবে আবেগ জড়িয়ে থাকায় পুলিশ-প্রশাসন বেশিরভাগ সময়ই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছেন না বলে জানাচ্ছেন তিনি। অনিমেষবাবু আরও বলেন, ‘‘এ বছর কালীপুজো থেকে ছট পুজো শিলিগুড়িতে যে হারে শব্দবাজি ফেটেছে, তা ভয়ানক। পুলিশ-প্রশাসনকে আরও শক্ত হাতে পদক্ষেপ করতে হবে।’’
এই প্রসঙ্গে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘‘কয়েকটি জায়গায় বেশ শব্দবাজি ফেটেছে বলে আমিও শুনেছি। মানুষকে নিজেদের স্বার্থেই সচেতন হতে হবে। আমি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের অফিসারদের বিষয়টি দেখতে বলেছি। ওঁরা রিপোর্ট দিক। তারপরে কী করা যায় দেখি!’’
শিলিগুড়ির মহানন্দা, বালাসান, পঞ্চনই নদীর দু’পাড়ে ছট পুজো হয়। পুজোকে ঘিরে রাতে কোথাও রাতভর জলসা কোথাও ডিজে বেজেছে। মহাকালপল্লির মহান্দার তীরে কয়েকশো ছটপুজোর ঘাট তৈরি হয়েছিল। সেখানেই একটি জায়গায় তীব্র আওয়াজে ডিজে বাজিয়ে চলেছে নাচ, সঙ্গত দিয়েছে শব্দবাজি। পুজো দিতে আসা বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আওয়াজে রাতভর যন্ত্রণা হয়েছে। একই পরিস্থিতি ছিল, নৌকাঘাট, সন্তোষীনগর, গঙ্গানগর, চম্পসারি থেকে শালুগাড়া পর্যন্ত। পুলিশ থাকলেও কোথাও বাধা দেয়নি বলে অভিযোগ। মহাকালপল্লির ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা মনোজ বর্মা জানান, এখন পুজোয় বাজি ফাটানো, ডিজে ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে রাতভর ডিজে বাজানোটা সঠিক হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy