উত্তর দিনাজপুর জেলায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রকল্পে সন্তান ধারণে সক্ষম নথিভূক্ত মহিলাদের ওষুধের বদলে এ বারে ইঞ্জেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। উত্তরবঙ্গে এই প্রথম কোনও জেলায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রকল্পে নথিভূক্ত মহিলাদের ইঞ্জেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল, ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল, কালিয়াগঞ্জ ও করণদিঘি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, জেলার সাতটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সহ ৩৪৪টি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নথিভূক্ত মহিলাদের ওষুধের বদলে জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। ওই ইঞ্জেকশনের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘অন্তরা’।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার দাবি, ওষুধের বদলে ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে নথিভূক্ত মহিলাদের হয়রানি কমবে। পাশাপাশি, জেলায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রাও ১০০ শতাংশে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে বর্তমানে জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রকল্পে সন্তান ধারণে সক্ষম ১৯ হাজার ৩৮৪ জন মহিলার নাম নথিভূক্ত হয়েছে। ওই প্রকল্পে জেলার সমস্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিমাসে তাঁদের বিনে পয়সায় ২১টি জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট ও ৭টি আয়রন ট্যাবলেট দেওয়া হয়। সেইসব মহিলারা যতদিন সন্তান নিতে চান না, ততদিন তাঁদের প্রতিমাসে টানা ২১ দিন জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট ও পরের ৭দিন আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ওই প্রকল্পে নথিভূক্ত মহিলাদের আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ওষুধের বদলে একটি করে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। প্রতি তিনমাস অন্তর সেইসব মহিলাদের একটি করে ইঞ্জেকশন নিতে হবে। তিনমাস পর কোনও মহিলা ইঞ্জেকশন নিতে ভুলে গেলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে ইঞ্জেকশন নেওয়ার অনুরোধ করা হবে। চিকিত্সকদের দাবি, কোনও মহিলা একবার ইঞ্জেকশন নিলে তারপর থেকে ১০৫ দিন সন্তানধারণে অক্ষম থাকবেন।
প্রকাশবাবুর দাবি, সন্তান নিতে না চাইলে এতদিন নথিভূক্ত মহিলাদের প্রতিমাসে প্রথম ২১ দিন টানা একটি করে ট্যাবলেট খেতে হত। অনেকক্ষেত্রে মহিলারা পর পর দু’দিন সেই ওষুধ খেতে ভুলে গেলে অন্ত্বঃসত্ত্বা হয়ে পড়তেন। ফলে ওষুধের মাধ্যমে এতদিন জেলায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রকল্প ১০০ শতাংশ সফল করা যায়নি। তাছাড়া প্রতিমাসে দূরের এলাকার মহিলারা হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। ইঞ্জেকশন চালু হলে মহিলাদের হয়রানি কমবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy