Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মনোনয়ন জমা নিয়ে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

পুর নির্বাচন ঘিরে কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব এল প্রকাশ্যে। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ঘটনা। বুধবার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। আগামী ২৫ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ পুরসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। বুধবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:৪৫
Share: Save:

পুর নির্বাচন ঘিরে কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব এল প্রকাশ্যে। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ঘটনা। বুধবার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।

আগামী ২৫ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ পুরসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। বুধবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ছিল। এদিন দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা কালিয়াগঞ্জ মিলনময়ী গার্লস হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা দীপা চৌধুরী স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে কালিয়াগঞ্জের বিডিও-র কাছে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

উল্লেখ্য, ওই ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে গত সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেন বিদায়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর ফুলতা বর্মন। পাশাপাশি, বিজেপি প্রার্থী হিসেবে সুস্মিতা ভৌমিক ও বামফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে শিপ্রা রায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার জন্মলগ্ন ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীপাদেবী কংগ্রেসের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৯ সালে ওই ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেননি। দীপাদেবীর সহযোগিতায় ওই বছর ফুলতাদেবী কংগ্রেসের টিকিটে প্রথমবার জয়ী হন। এ বছর অবশ্য ওই ওয়ার্ডটি সাধারণ ওয়ার্ডে পরিবর্তিত হয়েছে।

দীপাদেবীর দাবি, এ বার এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে কংগ্রেস প্রার্থী করার জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে একাধিকবার দাবি জানালেও তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। তিনি বলেন, “স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের একাংশ দুর্নীতি ও স্বজনপোষণে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। দলে ভাল ও প্রতিবাদী মানুষদের কোনও স্থান নেই।” তাঁর কথায়, “এলাকার বাসিন্দাদের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতেই আমি নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়ালাম। যতই চাপ আসুক প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই নেই।” প্রসঙ্গত, কাউন্সিলর থাকাকালীন অবস্থাতেই ২০০৬ সালে দীপাদেবী শিক্ষিকার চাকরি থেকে অবসর নেন।

কালিয়াগঞ্জ পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি অরুণ দে সরকার দাবি, “ষাটোর্ধ্ব দীপাদেবীর চাইতে এলাকার বাসিন্দারা তরুণ প্রজন্মের কাউকে কংগ্রেসের প্রার্থী করার পক্ষপাতী।” তা ছাড়া, ফুলতাদেবী গত পাঁচ বছর দক্ষতার সঙ্গে ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম পরিচালনা করেছেন। তাই সব দিক বিচার করে তাঁকেই প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, তাঁকে কংগ্রেসের প্রার্থী করা হচ্ছে না, সেটা জানতে পেরে কয়েকদিন আগে দীপাদেবী জেলা তৃণমূল নেতাদের কাছে প্রার্থী হতে চেয়ে দরবার করেন। কিন্তু তৃণমূলও তাঁকে প্রার্থী না করায় তিনি এদিন নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দেন।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য দীপাদেবীর নাম না করে বলেন, “অনেকেই প্রার্থী হতে চেয়ে দলে আবেদন করেছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনসংযোগ বিচার করে দলের পুরনো কর্মীদের মধ্যে তরুণ প্রজন্মদেরই প্রার্থী করা হয়েছে।” দীপাদেবীর অবশ্য দাবি, তিনি তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে কোথাও দরবার করেননি।

গত চার দশক ধরে কালিয়াগঞ্জ পুরসভা কংগ্রেসের দখলে। ২০০৯ সালের পুর নির্বাচনে পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ড দখল করে কংগ্রেস। ২টি করে ওয়ার্ড তৃণমূল ও বামফ্রন্টের দখলে যায়। এ বছর অবশ্য সব ক’টি ওয়ার্ডেই কংগ্রেস, তৃণমূল, বামফ্রন্ট ও বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে। সিপিআইএমএলের তরফে দুটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়া হয়।

রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক তথা মহকুমা নির্বাচনী আধিকারিক বিপুলকুমার বিশ্বাস জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নির্দল মিলিয়ে কালিয়াগঞ্জ পুরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ১১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পরীক্ষা করার দিন ধার্য হয়েছে। আগামী ২৮ এপ্রিল দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE