Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অনুমতি ছাড়াই শিশু দত্তক কী ভাবে, তদন্ত

শিশুকল্যাণ সমিতির অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে তিন বছরে পরপর ১৭ শিশুকে দত্তক দেওয়া হল জানতে তদন্ত শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী সরকার স্বীকৃত কোনও সংস্থা শিশু কল্যাণ সমিতি, জেলা আদালত সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তবেই দত্তক দিতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১০
Share: Save:

শিশুকল্যাণ সমিতির অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে তিন বছরে পরপর ১৭ শিশুকে দত্তক দেওয়া হল জানতে তদন্ত শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।

কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী সরকার স্বীকৃত কোনও সংস্থা শিশু কল্যাণ সমিতি, জেলা আদালত সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তবেই দত্তক দিতে পারে।

জলপাইগুড়ির নর্থ বেঙ্গল পিপলস ডেভলপমেন্ট সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তারা ১৭টি শিশুকে দত্তক দিলেও শিশু কল্যাণ সমিতি তার কিছুই জানে না। গত জুন মাসে শিশু কল্যাণ সমিতির তরফে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়লেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। সে কারণে প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সম্প্রতি বিষয়টি ফের প্রকাশ্যে এলে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গড়ে প্রশাসন।

দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করা এক দম্পতির থেকে মোটা টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও এ দিন ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যে পরিবারকে দত্তক দেওয়া হয়, তাঁদের বাড়ি গিয়েও সমীক্ষা করা হয়। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পদক্ষেপ হবে।’’

একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে এত দিন শিশু বিক্রির কারবার চলেছে উত্তরবঙ্গেও। কোনও ক্ষেত্রে সব নিয়ম মেনে দত্তক দেওয়া হলেও, যে পরিবারের হাতে শিশু তুলে দেওয়া হচ্ছে তাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে যাবতীয় নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিশু দত্তক দেওয়া হয়েছে। এ দিন এক দম্পতি অভিযোগ করেছেন, ২০১৪ সালে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কখনও বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষার পরে ছয় হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে, কখনও আবার খোদ সংস্থার প্রধানই টাকা চেয়েছেন। ওই দম্পতি ইতিমধ্যেই স্টেট অ্যাডপশন রিসার্চ অথরিটির অধিকর্তা, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও সিডব্লিউসি সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ পাঠিয়েছেন৷

ওই দম্পতি জানান, দক্ষিণবঙ্গের একটি হোম থেকে শিশু দত্তক চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। তাঁদের জানানো হয়, নর্থ বেঙ্গল পিপলস ডেভলপমেন্ট সেন্টার থেকে তাদেরকে হোম স্টাডি রিপোর্ট বানাতে হবে৷ সংস্থার থেকে এক ব্যক্তি বাড়িতে এসে সমীক্ষা করে ছয় হাজার টাকার চেক নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ।

রিপোর্ট আনতে জলপাইগুড়িতে সংস্থার দফতরে গেলে খোদ সংস্থার কর্তা দশ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। যদিও সংস্থার সম্পাদক চন্দনা চক্রবর্তী এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তার পাল্টা দাবি, ‘‘এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ এটা যে সম্পুর্ণ মিথ্যা একটা অভিযোগ তার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে৷ আরও যা অভিযোগ করা হচ্ছে তারও কোনও ভিত্তি নেই।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

child adoption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE