প্রস্তুতি: পরীক্ষার জন্য। শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিকে সাতদিনই পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল উত্তরবঙ্গের অনেক জায়গায়। তা নিয়ে তদন্তও চলছে। তাই এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে মোবাইল ডিটেক্টর বসানার সিদ্ধান্ত হয়েছে বিভিন্ন স্কুলে। শিলিগুড়ির স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে ছ’টি স্কুলকে। সেখানে মোবাইল ডিটেক্টর দিয়ে নজরদারি চালানো হবে। ওই যন্ত্রে শুধু মোবাইল নয়, স্মার্ট রিস্টওয়াচ বা স্ক্যানার থাকা হাতঘড়ি নিয়ে ঢুকলেও তা ধরা পড়বে।
সংসদ সূত্রের খবর, বিশেষভাবে ওই যন্ত্র তৈরি করে সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে। শিলিগুড়িতেও এসেছে কয়েকটি। স্পর্শকাতর স্কুলগুলো ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলে তা সংসদের প্রতিনিধিরা ব্যবহার করবেন। দু’দিন আগে শিলিগুড়িতে এর প্রশিক্ষণও হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অতিরিক্ত নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিলিগুড়ি জেলা স্কুল পরিদর্শক তপন বসু বলেন, ‘‘মাধ্যমিকের সময় প্রশ্নপত্র শিলিগুড়ি থেকে বার হয়নি। আমরা তাও বিশেষভাবে কয়েকটি স্কুলের দিকে নজরদারি চালাচ্ছি। কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না।’’
সংসদ সূত্রের খবর, শহরের এই স্কুলগুলোর জন্য আলাদা করে ভিডিয়োগ্রাফির ব্যবস্থা যেমন থাকছে, তার মধ্যে একটি স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, কেবল মোবাইলের উপর নজরদারি করলেই হবে না। পরীক্ষার হল থেকে অন্য আরও নানা উপায়েও প্রশ্নপত্র বেরিয়ে আসতে পারে। শিলিগুড়ি এক হাইস্কুলের শিক্ষক বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের কাছে এখন স্মার্টঘড়ি বা স্পাইস্ক্যানার লাগানো ঘড়ি থাকে। সেসব খুব সহজেই অনলাইনে মেলে। কেবলমাত্র মোবাইলের উপর যখন জোর দেওয়া হচ্ছে তখন এই ডিভাইসগুলো খুব সহজেই পরীক্ষার হলে ঢুকে পড়ছে। এসব ধরতে যন্ত্র নয়, হাতেকলমে নজরদারি প্রয়োজন।’
দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা বসু বলেন, ‘‘আমার মেয়ে এ বার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিকের সময় প্রশ্ন বেরিয়ে গিয়েছিল বলে জেনেছি। কেবলমাত্র মোবাইল নয়, অন্যান্য অনেকভাবেই তা হতে পারে।’’ প্রধানগরের বাসিন্দা আর এক অভিভাবক অরবিন্দ পালের কথায়, ‘‘প্রশ্ন ফাঁস আটকাতে সংসদ শুধু নয়, পুলিশ-প্রশাসনকে এক হতে হবে। প্রশাসনের কাছে আমরা চাইব, যাতে এগুলো আটকানো যায়।’’
অভিভাবকদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, অনলাইনে খুব সহজেই স্মার্টঘড়ি পাওয়া যায়। সেগুলো দিয়ে স্ক্যানও হয় বলে দাবি করছে বিক্রয়কারী সংস্থাগুলো। পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি কেন্দ্রেই পুলিশ নজরদারি চলবে। হাতঘড়ি দেখে সন্দেহে হলে তা বাজেয়াপ্ত করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। আশেপাশের জেরক্স বা সাইবার ক্যাফেতেও চলবে বিশেষ নজরদারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy