প্রতীকী ছবি।
৪৭ সদস্যের শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে মোটে দু’জন কাউন্সিলর বিজেপির। শিলিগুড়ির সব ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ দলীয় কমিটিই নেই তাদের। অথচ ইসলামপুরে গুলিতে দুই তরুণের মৃত্যুর প্রতিবাদে তাদের ডাকা বন্ধে শিলিগুড়ির জনজীবন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বুধবার। এখনও বামেদের দখলে থাকা শিলিগুড়ি পুর এলাকায় এ হেন বন্ধের ছবি দেখে বিভিন্ন দলের দফতরে এখন একটাই প্রশ্ন— বামেরা কি শিলিগুড়িতে পায়ের তলা জমি হারাচ্ছে? তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে তো বটেই, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা, চাপানউতোর।
সরাসরি না হলেও প্রকারান্তরে প্রশ্নটিতে সায় দিয়েছেন বামেদের একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, বিজেপি নয়, তাঁদেরই বন্ধ ডাকা উচিত ছিল। তবে আগের বন্ধগুলির অভিজ্ঞতা থেকে দলের মধ্যে দ্বিধা ছিল, এ বারও বন্ধ ডাকলে কি তা সফল হবে?
শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বুধবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, দুই ছাত্রকে গুলি করে মারার ঘটনায় আমজনতা যে তৃণমূল ও পুলিশের উপরে ক্ষুব্ধ, বিরক্ত তা এসএফআইয়ের ছাত্র ধর্মঘটেই বোঝা গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘তার পরে আমরা বাংলা বন্ধ ডাকিনি। বিজেপি ডেকে দিয়েছে। নাগরিকরা কে বন্ধ ডেকেছে, তা দেখেননি। তৃণমূল আর পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের জন্য ওই দিনটাকে বেছে নেন।’’
বিজেপির ডাকে সাধারণ মানুষের সাড়া দেওয়ার ঘটনা কিন্তু এ বার প্রথম নয়। গত বছর রামনবমীর মিছিলে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন।
যদিও এই সব ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ বাম এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। অশোক ভট্টাচার্য যেমন বলেছেন নাগরিকরা রং না দেখে বন্ধ সফল করেছে, তেমনই পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের দাবি, বন্ধে তেমন সাড়া মেলেনি। তাঁর কথায়, ‘‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জায়গা শিলিগুড়িতে হবে না।’’
নকশালপন্থীরা কিন্তু মনে করছেন বিজেপির শক্তি বেড়েছে এবং সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে তৃণমূলই। সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে গোলমাল ও তার পরের অবস্থা সামাল দিতে চরম ব্যর্থ হয়েছে তৃণমূল। কেন রাশটা বিজেপির হাতে চলে গেল, সেটা তৃণমূলকেই ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিজেপি কিন্তু হিসেব কষে ভাষার, ধর্মের বিষয়কে সামনে রেখে আসরে নামে।’’
বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) অভিজিৎ রায়চোধুরী মনে করেন, শিলিগুড়িতে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর এটাই সেরা সময়। গত রামনবমীতে দলের একাংশের উদ্যোগে বিশাল মিছিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির উপরে ভরসা বাড়ছে এখানে। সেটা ইদানীং নানা কর্মসূচিতে টের পাচ্ছি। এখন সব ওয়ার্ডেই শক্তিশালী কমিটি হবে। কারণ, সব জায়গাতেই সাড়া মিলেছে বন্ধে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy