Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাথর তোলার গর্তে তলিয়ে মৃত্যু

এই গ্রীষ্মকালে সাধারণত নদীতে হাঁটু জল থাকে। সেই ভেবেই মঙ্গলবার বিকেলে ওদলাবাড়ির হঠাৎ কলোনির কিশোরী খুশবু রায় (১১) নেমেছিল বাড়ির কাছের চেল নদীতে।

এই গর্তে পড়েই মারা যায় ওই কিশোরী।

এই গর্তে পড়েই মারা যায় ওই কিশোরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৮
Share: Save:

এই গ্রীষ্মকালে সাধারণত নদীতে হাঁটু জল থাকে। সেই ভেবেই মঙ্গলবার বিকেলে ওদলাবাড়ির হঠাৎ কলোনির কিশোরী খুশবু রায় (১১) নেমেছিল বাড়ির কাছের চেল নদীতে।

কিন্তু আচমকা বিরাট গর্তের মধ্যে পড়ে সে তলিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ বেআইনি ভাবে নদীর বুক থেকে পাথর তোলার জন্যই নদীগর্ভে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সেই গর্তে পড়েই মারা গিয়েছে খুশবু।

খুশবুর বাবা অনিল রায় পেশায় দিনমজুর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদী থেকে বড় বড় ট্রাকে করে অবৈজ্ঞানিক ভাবে পাথর তুলে ফেলাতেই এই গর্ত তৈরি হয়েছে। চেল নদীতেই পাথর ভাঙার কাজ করেন বাদল ভুজেল। তিনিই প্রথম কিশোরীর দেহ দেখতে পান বলে দাবি। বাদলবাবুর অভিযোগ, ‘‘নদীতে যে আকারে গর্ত তৈরি হয়েছে, তাতে সাঁতার না জানলে বেঁচে ফেরা কঠিন।’’ এ দিন বুধবার বাসিন্দারা একজোট হয়ে মালবাজারের মহকুমাশাসককে অবৈজ্ঞানিক ভাবে পাথর তোলা বন্ধের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিও দেন।


চেল নদীর খাত থেকে বালি, নুড়ি-পাথর তোলা হচ্ছে অবাধেই। — দীপঙ্কর ঘটক

উল্লেখ্য, যে পাথর ভাঙার কারখানার দিকে অভিযোগ উঠেছে তার মালিক রতন গর্গ আবার ওদলাবাড়ি এলাকার তৃণমূল নেতা। যদিও, রতনবাবু দাবি করেছেন, এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে সেটি তার কারখানা থেকে এক কিলোমিটার দূরে। তাঁর দাবি, ‘‘চেল নদীর যেখানে দু্র্ঘটনাটি ঘটে সেখানে এক সময় কারখানার জন্যে পাথর তোলার কাজ হলেও ৬ মাস আগে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরে কী ভাবে গর্তের গভীরতা বাড়ল তা জানা নেই।’’

ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএমের উপপ্রধান বিশ্বজিত নন্দীর নেতৃত্বে এ দিন স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। বিশ্বজিত নন্দী বলেন, ‘‘দ্রুত চেল নদীতে অবৈজ্ঞানিক ভাবে বালি পাথর তোলা বন্ধ করা হোক এবং মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। এই দু’টি দাবি না মিটলে আন্দোলন আরও বড় পর্যায়ে যাবে।’’ ওদলাবাড়ির তৃণমূল নেতা তথা মালবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি তমাল ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। যে গর্তটির কথা বলা হচ্ছে সেটি অনেকদিনের পুরানো। স্থানীয় অনেকেই এই গর্তের গভীরতার সম্পর্কে সচেতন। গর্ত বন্ধ হোক সেটা আমরাও চাই।’’ মালবাজারের মহকুমাশাসক এই ব্যাপারে প্রশাসন সচেতন হবে বলে জানিয়েছেন। নদী থেকে অবৈজ্ঞানিক ভাবে বালি, পাথর তোলা ঠেকাতে নজরদারিও শুরু হবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Juvenile Pit Died
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE