উদ্ধার অপহৃতরা।—নিজস্ব চিত্র
পুরাকীর্তি সংগ্রহের টোপ দিয়ে হরিয়ানার চার ব্যক্তিকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ চাওয়ার অপরাধে জলপাইগুড়ি থেকে চার জনকে গ্রেফতার করল কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এক জন সরকারি কর্মচারি। তাদের শুক্রবার জলপাইগুড়ির আদালতে তোলা হলে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “চার জনকে ধরা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কারও নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। আরও বড় চক্র জড়িত আছে বলে আমরা মনে করছি। তারা শিলিগুড়ি এবং কলকাতায় ছড়িয়ে আছে।’’ পাশাপাশি পুলিশ যাদের উদ্ধার করেছে তাদের বিষয়েও বিশদ খোঁজ খবর নিচ্ছে। কেন তারা পুরাকীর্তি কিনতে এসেছিল এবং পুরাকীর্তি নিয়ে তারা কি করতো এই সমস্তই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
জলপাইগুড়ির সরকারি আইনজীবী শান্তা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জলপাইগুড়ি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেবপ্রিয় বসুর এজলাসে ধৃতদের হাজির করা হলে তিনি তাদের সাত দিনের পুলিশের হেফাজতে রাখার আর্জি মঞ্জুর করেন। অপহৃত ব্যক্তিদের বক্তব্যও বিচারক লিপিবদ্ধ করেন।”
পুলিশ জানায়, হরিয়ানার সোনপথ জেলার জারোঠ এলাকার বাসিন্দা চার যুবককে কিছু পুরাকীর্তি বিক্রি করার জন্য ডেকে আনা হয়। কলকাতার এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগাযোগ হয়। এ মাসের ১৬ তারিখে তাঁরা শিলিগুড়িতে এসে পৌঁছন। তার পর তাঁদের লাটাগুড়ি এবং পরে মাথাভাঙায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুরাকীর্তি বিক্রির নামে দফায় দফায় টাকা নেওয়া হয়। এর পর তাদের পাহাড়পুর এলাকায় এনে আটকে রাখা হয়। হরিয়ানায় তাদের বাড়িতে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, অপহৃত চার জনের মধ্যে এক জনের দাদা রানিনগরে বিএসএফে কর্মরত আছেন। তিনি কোনও রকমে দাদার মোবাইলে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানান। বিএসএফের সেই কর্মী বিএসএফের ডিআইজিকে বিষয়টি জানান। তিনি জলপাইগুড়ির এসপিকে জানান। এর পর জলপাইগুড়ির পুলিশ নড়েচড়ে বসে। তারা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে পাহাড়পুর এলাকায় হানা দিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় চার অপহরণকারীকেও। তাদের মধ্যে এক জন সরকারি কর্মচারি ।
চার অপহরণকারীর নাম অমিতাভ রায়, বিকাশ রায়, রমেশ বর্মন এবং ওঙ্কার সরকার। অমিতাভ রায়ের বাড়ি ফালাকাটার সুভাষপল্লিতে, ওঙ্কার সরকারের বাড়ি জলপাইগুড়ি শহরের রায়কতপাড়ায় এবং বিকাশ রায় এবং রমেশ বর্মনের বাড়ি শহরের দু’নম্বর ওয়ার্ডের টোপামারি এলাকায়। এদের মধ্যে ওঙ্কার সরকার জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। রমেশ বর্মন দিনমজুর এবং অমিতাভ রায় এবং বিকাশ রায় বিশেষ কিছু
করে না।
হরিয়ানা থেকে চলে এসেছেন অপহৃতদের আত্মীয়স্বজনরা। তাঁদের মধ্যে ধর্মেন্দ্র দাইয়া বলেন, “অপহরণকারীরা ওদের সমস্ত টাকা পয়সা কেড়ে নিয়েছে। মারধর করেছে। আবার দশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায়।’’ এঁদের সূত্রেই জানা গিয়েছে যাঁদের অপহরণ করা হয়েছে তারা যথেষ্ট অর্থবান। জমি কেনাবেচার ব্যবসা করেন তাঁরা। কলকাতার এক ব্যক্তি দিল্লিতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পর তাঁরা শিলিগুড়িতে আসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy