প্রতীকী চিত্র।
আগ্নেয়াস্ত্র পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করলেন কলকাতার লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার অফিসারেরা।
বুধবার সকালে মাটিগাড়ার থানার পুলিশের সাহায্যে উত্তরায়ণ উপনগরীর এক ফ্ল্যাট থেকে ওই যুবককে ধরা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সঞ্জীব তেওয়ারি ওরফে বাবু। গড়িয়াহাটের বন্ডেল রোড এলাকায় তার বাড়ি। পেশায় প্রোমোটার ও জমির কারবারি সঞ্জীব কিছুদিন ধরে শিলিগুড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে হেস্টিংস থানার একটি মজসিদ লাগোয়া এলাকা থেকে দুই যুবকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দা শাখার গুন্ডা দমন বিভাগের অফিসারেরা। একটি রিভলবার এবং কার্তুজ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে সঞ্জীব পালিয়ে গিয়েছিল। এর পরে বিভিন্ন সূত্র এবং মোবাইলে নজরদারি চালিয়ে অভিযুক্তকে ধরা হল।
এ দিন দুপুরে ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে গিয়েছেন গোয়েন্দারা। কলকাতায় পুলিশের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, ধৃতেরা বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পাচার চক্রের সদস্য। কলকাতায় কোথায় কোথায় এদের ঘাঁটি, অস্ত্র কারখানা রয়েছে তা নিয়ে তদন্তে শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক অফিসার জানান, সঞ্জীবকে মামলার বাকি অভিযুক্তদের সামনে বসিয়ে জেরা করে চক্রের অস্ত্রের ঘাঁটির খোঁজ শুরু করা হবে। প্রোমোটারি ব্যবসার সুবাদে ধৃতের কোনও নির্মিয়মাণ বাড়ি বা ফ্ল্যাটে আরও আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে কি তা দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ আমাদের সাহায্য চেয়েছিল। শিলিগুড়িতে ধৃতের কোনও বিষয় রয়েছে কি না তা আমরা দেখছি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৪ ফেব্রুয়ারি হেস্টিংসের ক্যানাল রোডের মসজিদের সামনে থেকে মহম্মদ ছোটু এবং মহম্মদ শাহিদকে ধরা হয়। তারা ওই এলাকারই বাসিন্দা। সেখান থেকেই পালিয়ে যায় সঞ্জীব। পুলিশের দাবি, ধৃতদের রাতের অন্ধকারে সঞ্জীবের মাধ্যমে কাউকে আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ বিক্রির ছক ছিল। মূলত বিহারের মুঙ্গের ও উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র শহরে আনা হয়। কোনও কোনও সময় ওই এলাকার অস্ত্র তৈরিতে পারদর্শী যুবকদের এনে গোপন ঘাঁটিতে রেখে অস্ত্র তৈরি করানো হয়। ধৃতদের এমনই দলের সদস্য বলে লালবাজারের গোয়েন্দাদের অনুমান। কলকাতায় ধৃতদের জেরার পর এমনই কিছু তথ্য সামনে আসায় সঞ্জীবের খোঁজ
শুরু হয়।
সঞ্জীবের মাটিগাড়া এলাকায় থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের দলটি শিলিগুড়ি আসে। কমিশনারেটের মাটিগাড়া থানার ওসি মৃন্ময় ঘোষের সহযোগিতায় রাতেই উত্তরায়ণ উপনগরীতে খোঁজখবর শুরু হয়। সিটি সেন্টারের বিভিন্ন পানশালা, নাইট ক্লাবেও পুলিশ যায়। গভীর রাতে উপনগরীর ‘জি-৪’ ব্লকের একটি ফ্ল্যাটে সঞ্জীবের খোঁজ মেলে। ফ্ল্যাটটি তারই এক বন্ধুর। শিলিগুড়িতে কিছু কাজের কথা বলে গত ১০-১২ দিন ধরে তিনি সেখানেই থাকছিলেন। রাতে বাড়িটিতে টানা নজরদারি রাখা হয়। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বহুতলে পুলিশ ঢুকে ফ্ল্যাটটিতে হানা দেয়। ঘুম থেকে উঠে সেই সময় চা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল অভিযুক্ত। তখনই তাকে ধরা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy