Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সন্তান কোলে তিস্তায় ঝাঁপ তরুণীর, এক মাস আগে আত্মঘাতী হন স্বামী

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মাসখানেক আগে ওই তরুণীর স্বামী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৬:২০
Share: Save:

জাতীয় সড়কে যানজট। সেতুর ওপরে দু’মুখ করে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেতুর এক পাশ দিয়ে হেঁটে আসছেন এক তরুণী। কোলে শিশু, হাতে ব্যাগ। হঠাৎই বাসিন্দারা দেখেন, হাতের ব্যাগ সেতুতে নামিয়ে রেখে কোলের শিশুকে জাপ্টে ধরে মহিলা সেতুর রেলিঙে উঠছেন। আশপাশ থেকে কয়েক জন দৌড়ে যাওয়ার আগেই মহিলা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন বলে দাবি। ভরা বর্ষায় তিস্তা কানায় কানায় ভর্তি। ঝাঁপ দেওয়ার পর নদীতে মহিলাকে আর দেখা যায়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা সেতুতে রবিবার বিকেলে এমনই ঘটেছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। মহিলার খোঁজে নদীতে তল্লাশি চলছে।

সেতুতে রাখা ব্যাগে একটি ভোটার কার্ড মিলেছে, তা থেকেই মহিলার পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। ভোটার কার্ডটি অবশ্য তাঁর স্বামীর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বছর ছাব্বিশের ওই মহিলা শিশুকন্যাকে নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিস্তা সেতুতে তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন। কিছু ক্ষণ হেঁটে তার পরে নদীতে ঝাঁপ দেন। তিস্তা সেতু লাগোয়া নদী জলে কানায় কানায় ভরা। মহিলার খোঁজে এ দিন সন্ধ্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল এসে কিছু ক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে। তবে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় ভরা তিস্তায় তল্লাশি চালানো যায়নি বলে দাবি।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মাসখানেক আগে ওই তরুণীর স্বামী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন। সপ্তাহ তিনেক আগে মহিলা মেয়েকে নিয়ে শিলিগুড়িতে দিদির বাড়িতে থাকতে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের তরফে দাবি। এ দিন দুপুরে দিদির বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তাঁর ভাই কাজের সূত্রে চেন্নাইতে থাকেন। ঝাঁপ দেওয়ার আগে মহিলা তাঁকেও ফোন করেছিলেন।

ব্যাগ থেকে মিলেছে এই ভোটার কার্ডটি। —নিজস্ব চিত্র।

তিনি বলেন, “স্বামীর মৃত্যুর পরে বোনের মন মেজাজ ভাল ছিল না, তাই আমরাই দিদির বাড়িতে থাকতে পাঠিয়েছিলাম। হঠাৎ আজ বিকেল বেলায় বোন আমাকে ফোন করে বলে, ওর বোঝা কারও উপর চাপাতে চায় না। মেয়েকে নিয়ে তিস্তাতে ঝাঁপ দেবে বলে জানায়। আমি পাগলের মতো ওকে বোঝাতে থাকি। ও ফোন কেটে দেয়। তারপর থেকে ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি।”

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স যৌথ ভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tista River Suicide Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE