হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো দ্রুত তৈরির দাবিতে অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে বামফ্রন্টের আন্দোলনের প্রস্তাবকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠল শহরে। বৃহস্পতিবার ছ’টি বামপন্থী দলের ‘বৃহত্তর বামফ্রন্টের’ তরফে ঘোষণা করা হয়, সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো দ্রুত তৈরির দাবিতে আন্দোলনের জন্য আগামী ২৩ মে গণ কনভেনশনে অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করা হবে। আদালতের আইনজীবী মহলের বড় অংশ তো বটেই, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও প্রশ্ন তুলেছে, আন্দোলনের জন্য ‘সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটি’ থাকা সত্ত্বেও কেন পৃথক মঞ্চ গঠনের উদ্যোগ? ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করতেই কি এই রাজনৈতিক চমক? উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য বামেদের আন্দোলনকে কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা বলে দাবি করেছেন।
বামফ্রন্টের পক্ষে সিপিএমের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক জিতেন দাস বলেন, “দাবি আদায় সমন্বয় কমিটির তো কোন কর্মসূচি নেই। অনেক দিন অপেক্ষার পরে অরাজনৈতিক মঞ্চ গঠনের উদ্যোগ নিতে হল। আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনকে গণ কনভেনশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওঁরা মতামত জানাতে পারেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কটাক্ষ, “কোনও অরাজনৈতিক মঞ্চের দরকার নেই। ওদের বলব বিড়ম্বনার সৃষ্টি না করে চুপচাপ থাকুন।” এদিন খারিজা বেরুবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মালকানি হাটে কমিউনিটি হলের সূচনার পরে মন্ত্রী জানিয়েছেন, বার কয়েক প্ল্যান পরিবর্তনের ফলে কাজের সমস্যা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে তিনি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে পরিকাঠামো তৈরির কাজ নিয়ে কথা বলবেন।
শুধু মন্ত্রী নয়। বামফ্রন্ট নেতৃত্বের সাফাই মানতে রাজি নয় জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনও। উল্টে সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে এতদিন তাঁরা যেভাবে সার্কিট বেঞ্চের দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটির মঞ্চে থেকে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন আগামী দিনেও যেন একই ভুমিকা পালন করেন। সংগঠনের সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরী বলেন, “হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের দাবিতে সমস্ত আন্দোলন সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটির নামে হয়েছে। বার অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ওই মঞ্চে আছেন। এর পরে পৃথক মঞ্চ তৈরির কথা উঠছে কেন বুঝছি না।”
বামফ্রন্ট নেতৃত্ব অরাজনৈতিক মঞ্চ গঠনের কথা বললেও বিশ্বাসযোগ্য মনে করতে পারছেন না চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্রপ্রসাদ বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বামফ্রন্ট নিরপেক্ষ মঞ্চ গড়ে আন্দোলনের নামে রাজনৈতিক চমক দেওয়ার চেষ্টা করছে। সামনে বিধানসভা নির্বাচন সেটাই পাখির চোখ হয়েছে।’’ আইনজীবী স্বরূপ মণ্ডল প্রশ্ন তুলেছেন, “এতদিন পরে বাম নেতাদের ঘুম ভাঙল।’’ সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বের আশঙ্কা, আন্দোলনে রাজনীতির প্রবেশ ঘটলে পরিণতি ভাল হবে না। সংস্থার সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের ভরসা রয়েছে সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় ও সমন্বয় কমিটির আন্দোলনের প্রতি। সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে রাজনীতি শুরু হলে জলপাইগুড়ির ক্ষতি হবে। এটা কাম্য নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy