Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

যুব-র ভোট কি আনতে পারবেন নিজের বাক্সে?

একসময় তাঁর দাপটে দলের মধ্যেই গোষ্ঠী রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। উপায় না দেখে দলের মধ্যে একসময়ের বিরোধীরাও ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে অবশ্য দল তাঁকে বহিষ্কার করে। সেই যুব তৃণমূলের নেতা নিশীথ প্রামাণিককেই এ বার প্রার্থী করেছে বিজেপি।

স্বাগত: নিশীথকে অভ্যর্থনা অশোকের। পাশে গত বারের প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মণ। শনিবার কোচবিহার বিজেপি অফিসে। নিজস্ব চিত্র

স্বাগত: নিশীথকে অভ্যর্থনা অশোকের। পাশে গত বারের প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মণ। শনিবার কোচবিহার বিজেপি অফিসে। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ 
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪৭
Share: Save:

একসময় তাঁর দাপটে দলের মধ্যেই গোষ্ঠী রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। উপায় না দেখে দলের মধ্যে একসময়ের বিরোধীরাও ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে অবশ্য দল তাঁকে বহিষ্কার করে। সেই যুব তৃণমূলের নেতা নিশীথ প্রামাণিককেই এ বার প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাতে কি কিছুটা হলেও কোণঠাসা হয়ে পড়ল তৃণমূল? কেউ কেউ মনে করছেন, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের একটি অংশের সঙ্গে ভাল যোগাযোগে বাজিমাত করে দিতে পারেন নিশীথ। আবার অনেকেই মনে করছেন, বিজেপির নেতা-কর্মীরা নিশীথকে নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত। তাতে বিজেপির নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কই অটুট থাকবে না। তাই নিশীথকে প্রার্থী করে ব্যাকফুটে রয়েছে বিজেপি।

এই আসনে উপনির্বাচনে চার লক্ষের বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়। ওই নির্বাচনে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। বামেরা চলে যায় তৃতীয় স্থানে। ২০১৪-এর দু’বছরের মধ্যে কোচবিহারে বামেরা ক্ষয়ে যায়। তাদের একটি বড় তৃণমূল-িবরোধী অংশ বিজেপিতে চলে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে এ বারে তৃণমূল ও বিজেপির লড়াই যে হাড্ডাহাড্ডি হবে তা ধরেই নেন সবাই। বিজেপির মাথাব্যথা ছিল গ্রামাঞ্চলের ভোট। গ্রামের দিকে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় বিজেপি শক্তিশালী হলেও, বহু এলাকায় প্রচারে বেরোনোর মতো সাহস নেই বিজেপি কর্মীদের।

বিজেপি সূত্রের খবর, এখানে দল এমন একজনকে চেয়েছিলেন, যিনি গ্রামের তৃণমূল ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারেন। সেই জায়গাতেই তাঁদের পছন্দের তালিকায় চলে আসেন নিশীথ। নিশীথের বাড়ি দিনহাটার ভেটাগুড়িতে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ানো প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল দাঁড় করিয়ে দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ওই পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেন তিনি। তার বাইরেও জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে নিজের অনুগামী তৈরি করেন। বিজেপি মনে করছে, ওই ভোটব্যাঙ্ক এ বারে নিশীথ নিজের বাক্সে ফেলতে পারবেন। তৃণমূল মনে করছে, নিশীথকে দল থেকে বহিষ্কার করার পরেই তাঁর পাশ থেকে অধিকাংশ তৃণমূল কর্মী সরে যায়। বিজেপি কর্মীরা কখনওই নিশীথকে পছন্দ করতেন না। তাই লাভের বদলে আসলে ক্ষতি হয়েছে বিজেপির।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তৃণমূলের দাবি করেছে, নিশীথের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অসামাজিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। যে ব্লকে তাঁর দাপট সব থেকে বেশি, সেখানে একটি বড় অংশের ভোটব্যাঙ্ক সংখ্যালঘু। তাঁরা বিজেপিকে চট করে ভোট দেবে না। তৃণমুলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের তো প্রশ্নই নেই, বিজেপি’র লোকেরাও তাঁকে মেনে নিতে পারেনি।’’ নিশীথ অবশ্য বলেন, “মানুষ পরিবর্তন চাইছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE