প্রতীকী ছবি।
রবিবার সকাল থেকেই সোশ্যাল সাইটে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের নানা এলাকায়। এনআরসি চালুর ফলে অসমের গোর্খারা দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন এমন বিষয় নিয়েই তৈরি হয়েছে মিনিট পনেরোর সেই ভিডিয়ো। কারা তৈরি করেছে ওই ভিডিয়ো, নাম দেওয়া রয়েছে তারও। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার।
এনআরসি চালু নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে রয়েছে পাহাড়ের রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সকলেই এনআরসি নিয়ে মুখ খুলেছে। এই পরিস্থিতিতে ওই ভিডিয়ো পাহাড়ের ভোটে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলো।
ভিডিয়োটিতে অসমের কোকরাঝার জেলার কয়েকটি গোর্খা পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য শোনানো হয়েছে। ভিডিয়োতে দেখানো হয়েছে, এনআরসিতে ওই পরিবারের সদস্যদের নাম বাদ পড়ায় এখন তাঁরা নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ছোটাছুটি করছেন। নাম বাদ যাওয়ায় তাঁরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছেন বলেও জানিয়েছেন। মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, ‘‘ভিডিয়োতে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। সকলের ভিডিয়োটি দেখা উচিত।’’ যদিও বিজেপির পাহাড় কমিটির সভাপতি মনোজ দেওয়ান বলেন, ‘‘এনআরসিতে পাহাড়বাসীর কোনও ক্ষতি হবে না। ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে পরিকল্পিতভাবে মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করতেই ভিডিয়ো ছড়ানো হচ্ছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোটের দিন ঘোষণার কিছুদিন আগে সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার একটি মন্তব্য ঘিরে পাহাড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। বিনয় তামাংয়ের অভিযোগ, প্রাক্তন সাংসদ পাহাড়ের বাসিন্দাদের অনুপ্রবেশকারী বলেছিলেন। পাহাড় ও সমতলের সব বড় দলগুলো সাংসদের ওই বক্তব্যের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছিল। কয়েকদিন আগে কালিম্পংয়ের নির্বাচনী জনসভা থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ হুঁশিয়ারি দেন ক্ষমতায় এলে অসমের মতো এই রাজ্যেও এনআরসি চালু করবেন তাঁরা। সেই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে পাহাড়বাসীর পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড় ও সমতলের একাধিক জনসভা থেকে তিনি স্পষ্ট জানান, কোনও পরিস্থিতিতেই এ রাজ্যে এনআরসি চালু করতে দেবেন না তিনি। এনআরসির নামে বিজেপি গোর্খাদের অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে পাহাড় থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিতের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে পাহাড়জুড়ে বিজেপি বিরোধী প্রচার শুরু করে তৃণমূল ও মোর্চা।
সেই পরিস্থিতিতে গোর্খাদের পাশে থাকার বার্তা দেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৩ এপ্রিল শিলিগুড়ির কাওয়াখালি মাঠের নির্বাচনী সভা থেকে তিনি ঘোষণা করেন, এনআরসি নিয়ে পাহাড়ের গোর্খাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। একজনেরও নাম বাদ যাবে না। তারপরে বৃহস্পতিবার দার্জিলিং ও শুক্রবার কার্শিয়াংয়ের সভা থেকে এনআরসি নিয়ে ফের বিজেপিকে বেঁধেন মমতা।
চকবাজারের ব্যবসায়ী স্বপ্না ভূজেল দেখেছেন ভিডিয়োটি। তিনি বলেন, ‘‘ভিডিয়োতে যা দেখলাম তাতে এখন আমাদেরও ভয় হচ্ছে।’’ মিরিকের একটি হোম-স্টের মালিক প্রতাপ তামাং বলেন, ‘‘মুখের কথা বিশ্বাস করা কঠিন। তবে ভিডিয়োতে স্পষ্টভাবে অসমের গোর্খা পরিবারগুলো দুর্দশার কথা বলেছেন। তারপর এনআরসি নিয়ে সন্দেহ থাকে না। আমরা আতঙ্কে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy