—প্রতীকী ছবি।
এ বারের ভোটে প্রথম থেকেই উত্তরবঙ্গকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আট আসনে তিন দফায় ভোট হয়েছে এখানে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক বার সভা করতে এসেছেন। তিনি যেমন কোচবিহারে সভা করেছেন, তেমনই বাদ যায়নি বালুরঘাটও। রবিবার এক্সিট পোল বা বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, এই আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার ফসল তুলতে পারে বিজেপি। এবিপি আনন্দ-এসি নিয়েলসেনের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, আটের মধ্যে পাঁচটি আসন পেতে পারে বিজেপি। তৃণমূল পেতে পারে দু’টি এবং কংগ্রেসের ভাগে জুটতে পারে একটি আসন।
সমীক্ষা অনুযায়ী, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, বালুরঘাট ও মালদহ উত্তর আসনে জিততে পারে বিজেপি। উল্টো দিকে, তৃণমূলের ঝুলিতে আসতে পারে জলপাইগুড়ি আর রায়গঞ্জ আসন দু’টি। কংগ্রেস পেতে পারে মালদহ দক্ষিণ আসনটি।
বুথফেরত সমীক্ষা যে অভ্রান্ত এবং সব ক্ষেত্রে মিলে যায়, এমন নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, বুথফেরত সমীক্ষার ফল বাস্তবের ধারেকাছেও যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে আবার দুই ফল হুবহু মিলেও গিয়েছে। তাই মানুষ কী ভাবছেন এবং ভোটবাক্সে তার প্রতিফলনই বা কী হতে পারে, তার একটা আভাস পাওয়ার ক্ষেত্রে বুথফেরত সমীক্ষা অনেক সময়ই কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বারের সমীক্ষা মিলবে কিনা, সেটা ২৩ তারিখই জানা যাবে। তবে এ দিনের সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গে আগের বার জেতা তিনটি আসন হারাতে পারে তৃণমূল— কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও বালুরঘাট। ২০১৪তে কোচবিহারে সাংসদ হন তৃণমূলের রেণুকা সিংহ। তিনি হঠাৎ মারা গেলে ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। তাতে চার লাখেরও বেশি ভোটে জেতেন তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায়। বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় হয় বিজেপি। এ বারে যদি তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নিশীথ প্রামাণিক বিজেপির টিকিটে জিতে যান, তা হলে ওই চার লাখের ব্যবধান টপকে যাবে তারা। যেটা অঙ্কের দিক থেকে বিরাট ভোট স্যুইং।
আলিপুরদুয়ারের আওতায় যে সাতটি বিধানসভা রয়েছে, ২০১৬ সালে তার ছ’টিতে জিতেছিল তৃণমূল। একটিতে বিজেপি। তবে তৃণমূলের জেতা আসনগুলির বেশ কয়েকটিতে ব্যবধান ছিল যথেষ্ট কম। সেখানে মাদারিহাটে বিজেপি জিতেছিল ২২ হাজারেরও বেশি ভোটে। এই লোকসভা কেন্দ্রে গত দু’বছর ধরে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত ছিল চোখে পড়ার মতো। আদিবাসী নেতা জন বার্লার জনপ্রিয়তাও যথেষ্টই।
এ বারে আদিবাসী ভোট তৃণমূল থেকে বিজেপির দিকে সরে যেতে পারে বলে আগেই আলোচনা হয়েছে। তা যদি সত্যি হয়, তা হলে আলিপুরদুয়ারের মতো মালদহ উত্তর এবং বালুরঘাটও বিজেপির ঝুলিতে পড়ার সম্ভাবনা। এবিপি আনন্দ-এসি নিয়েলসেনের সমীক্ষাতেও সেটাই দেখা যাচ্ছে। সমীক্ষা বাস্তব হলে বালুরঘাটে অর্পিতা ঘোষ হারতে পারেন। তার পিছনে একই সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও অন্যতম কারণ হতে পারে। মালদহ উত্তরও বেরিয়ে যেতে পারে মৌসম নুরের হাত থেকে। তাঁর আর ইশা খান চৌধুরীর মধ্যে গনি-পরিবারের ভোট ভাগাভাগি এ ক্ষেত্রে ‘ফ্যাক্টর’ হতে পারে।
বিমল গুরুং না থাকলেও তাঁর জাদু কি পাহাড়ে ছেয়ে রয়েছে? দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপিকে সম্ভাব্য বিজয়ী বলে সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল সমীক্ষা। তেমনই রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে সমীক্ষা। কানাইয়ালাল আগরওয়াল ইসলামপুরে যথেষ্ট প্রভাবশালী। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জেলায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি। বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী দাড়িভিট কাণ্ড থেকেই এখানে নিয়মিত যাতায়াত করছেন। আবার দীপা দাশমুন্সি এবং মহম্মদ সেলিমের প্রভাবও কম নয়। এই জোর টক্করের আসনে কিন্তু শেষ অবধি কানাইয়াকেই এগিয়ে রাখল সমীক্ষা।
সমীক্ষায় রাজ্যে কংগ্রেসকে দু’টি আসন দেওয়া হয়েছে। তার একটি মালদহ দক্ষিণ। অর্থাৎ, আবু হাসেম খান চৌধুরী রেখে দিতে পারেন গতবারের জেতা আসনটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy