Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাড়তি ভোটেই কি মীমাংসা

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় যখন ভোটের সময় শেষ হচ্ছে, তখনও জলপাইগুড়ির ৫৪টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০৯:৫৩
Share: Save:

ভোটদানের হারে নজির তৈরি করল এ বারের জলপাইগুড়ি লোকসভা। নির্বাচন কমিশন থেকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ বার জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে প্রায় ৮৬.৪৪ শতাংশ। যা গত দেড় দশকের রেকর্ড বলেই জানাচ্ছে প্রশাসনের একাংশ। ময়নাগুড়ি বিধানসভা এলাকায় ভোটের হার প্রায় ৯০ শতাংশ ছুঁয়েছে। ময়নাগুড়ির মাগুরমারি, জলপাইগুড়ির করলা ভ্যালি, কালীরহাট বাজার এলাকার বুথে নব্বই শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানা গিয়েছে নির্বাচন আধিকারিকের দফতর সূত্রে। এই বাড়তি ভোট কার দিকে গিয়েছে তা নিয়েই আপাতত চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। ভোট পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নানা দলের নেতা-নেত্রীরা মনে করছেন, এই বাড়তি ভোটই জয়-পরাজয়ের মীমাংসা করে দিতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় যখন ভোটের সময় শেষ হচ্ছে, তখনও জলপাইগুড়ির ৫৪টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। ১৮৬৮টি বুথের সবকটির হিসেব মেলাতে রাত পেরিয়ে যায়। শুক্রবার প্রশাসন জলপাইগুড়িতে ভোটদানের হার জানায়। ২০১৪-তে লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে ভোট পড়েছিল ৮৫ শতাংশ, ২০০৯-এ তার পরিমাণ ছিল ৮২ শতাংশ। জলপাইগুড়ি জেলার ৬টি এবং কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ বিধানসভা নিয়ে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্র। লোকসভা ভোটের নিরিখে বিধানসভা ভিত্তিক ভোট পড়ার যে হার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তা দেখেও চোখ কপালে উঠেছে রাজনৈতিক নেতাদের।

বিজেপির হয়ে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন দলের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রবাল রাহা। তিনি বলেন, “সাধারণ নিয়ম বলে, বেশি ভোট হওয়া মানে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট বেশি পড়া। গত পঞ্চায়েত ভোটে সাধারণ বাসিন্দারা ভোট দিতে পারেননি। এ বার সকাল থেকে দাঁড়িয়ে নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন। অবশ্যই এই ভোট তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়েছে।” ভোটদানের হিসেব দেখে এ বার জলপাইগুড়ি আসনে ‘অঘটনে’র স্বপ্ন দেখছেন বিজেপির নেতারা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভোটের হার(বিধানসভা ভিত্তিক)

• জলপাইগুড়ি: ৮৫%
• ময়নাগুড়ি: ৮৯%
• ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি: ৮৫%
• রাজগঞ্জ: ৮৯%
• ধূপগুড়ি: ৮৭%
• মালবাজার: ৮৪%
• মেখলিগঞ্জ: ৮৭%

যদিও তৃণমূলের দাবি, বাড়তি যে ভোট পড়েছে তা তাঁদের সাংগঠনিক জোরে। বিকেলের পরে তৃণমূল নেতারা বুথে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করিয়েছেন বলে দাবি রাজ্যের শাসকদলের। দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা ভোটটা করতে জানি। গণনার দিনই তা প্রমাণ হবে।”

তৃণমূলের অভিযোগ, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে ভোট কেনার চেষ্টা করেছে বিজেপি। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক নেতা নিজে জলপাইগুড়িতে টাকা বিলি করিয়েছেন বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি স্থানীয় রাজনৈতিক দল, অন্য বিরোধী দলের নেতা এমনকী তৃণমূলের বুথের নেতাদেরও বিজেপি টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ। সৌরভের অভিযোগ, “চালসার রিসর্ট, লাটাগুড়ির হোটেল থেকে টাকা ছড়িয়েছে বিজেপি। ভোটের আগে জলপাইগুড়ি থেকেও টাকা গিয়েছে ডুয়ার্সে, আমাদের বহু নেতাকে ফোন করেছিল ওদের নেতারা। তাতেও কোনও লাভ হবে না।” যদিও এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা প্রবাল রাহা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE