খোঁজখবর: শিলিগুড়ি কড়াইবাড়িতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: বিনোদ দাস।
প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছে ক’দিন আগে মাত্র। শহর থেকে গ্রাম, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে সেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কাউন্টারেই ভিড় জমল বেশি। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ঘুঘুডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদনের লাইন এতটাই লম্বা হয় যে, অনেককেই এ দিন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। তা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন কয়েক জন। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রয়াস হলে দুয়ারে সরকার প্রকল্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেও এ দিন যে ২৬৩ জনের মধ্যে ২৫২ জনই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আবেদন করেছেন। তবে জলপাইগুড়ি চা বলয়ে ভিড় দেখা গিয়েছে জনজাতি শংসাপত্র সম্পর্কে জানতে এবং আবেদন করতে। ময়নাগুড়ির যাদবপুর চা বাগানে দুয়ারে প্রশাসনের শিবির হয়। সেখানে জনজাতি শংসাপত্র পেতে কী কী নথি প্রয়োজন, তা জানানো হয় শ্রমিকদের। প্রয়োজনীয় কাগজ জোগাড় করে রাখতে বলা হয়। দ্বিতীয় দফায় বাগানে ফের শিবির হবে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে কিছু দিন আগে জেলা তৃণমূলের তরফেও প্রচার করা হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রতি পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ পেতে পারে। কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের না থাকা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ঘোষণা করা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের লাভ আগামী বিধানসভা ভোটে তুলতে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল। এ দিন দুয়ারে সরকার প্রকল্পে স্বাস্থ্যসাথীর টেবিলে ভিড় দেখে হাসি চওড়া হয়েছে তৃণমূল নেতাদের মুখে। ভিড় দেখা গিয়েছে জমি বিষয়ক কাউন্টারেও। সেখানে পাট্টা পাওয়ার আবেদন জমা পড়েছে। জমা পড়েছে পাট্টা না পাওয়ার ক্ষোভও। যুবশ্রী এবং রূপশ্রী প্রকল্পে নাম না থাকা, রেশন কার্ড না পাওয়ার অভিযোগও জমা পড়েছে একাধিক। এ দিন পুরসভার প্রয়াস হলে বেশ কিছু আবেদনকারীকে রেশন কার্ড স্থানান্তরের আবেদন করতেও দেখা যায়। তাঁরা বলেন, “খাদ্য দফতরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে পুরসভায় পাঠিয়ে দিল।”
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ঘুঘুডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে দাঁড়িয়ে রত্না রায়, পুনম রায়রা বলেন, “স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন করতে এসেছিলাম। ফিরিয়ে দিল। বলল, ১৫ ডিসেম্বরের পরে আসতে।” ভেতরে গিয়ে দেখা গেল স্বাস্থ্যসাথীর লম্বা লাইন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীর কথায়, “সকাল থেকে এখানেই লাইন। এক দিনে কত আর করব! তা ছাড়া লোডশেডিং হয়ে গেল।” জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের পরিবারের সদস্য। তাই সকলকে তিনি স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় এনেছেন। মানুষ তাতে উৎসবের মেজাজে শামিলও হচ্ছেন।” জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর কটাক্ষ, “কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ৬ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ থেকে তিন বছর ধরে রাজ্যের সব বাসিন্দাকে বঞ্চিত করে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে যে গরিব মানুষেরা এই ক’বছরে মারা গেলেন, তাঁদের পরিবারের লোকেদের কী বলবেন তৃণমূল নেতারা?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy