Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গণপিটুনি কেন ফিরল, উদ্বেগ

এলাকার বাসিন্দাদের কথায় কখনও পিকআপ ভ্যানে কখনও ট্রাকে চাপিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সীমান্তে। সুযোগ বুঝে তা পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। এমনই অভিযোগ রয়েছে বহু বছর ধরেই।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share: Save:

সবে শীত পড়তে শুরু করেছে। ভোর সকালে কুয়াশাও পড়ছে কিছুটা। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গরু পাচার বাড়ছে কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্তে। সে দৃশ্য চোখে পড়ছে সীমান্ত সংলগ্ন কোনও গ্রামে গেলেই। কিন্তু তার জন্য কোতোয়ালি থানারই একটি অংশের মানুষ এত উত্তেজিত যে, গণপিটুনিতে দু’জনকে মেরে ফেলা হতে পারে, এমন খবর প্রশাসনের কাছে ছিল না। পুটিমারী-ফুলেশ্বরীর কেদারহাটে বুধবার রাতে প্রকাশ দাস (৩৫) এবং রবিউল ইসলাম (৪০) গণপিটুনির শিকার হওয়ার পরে সে প্রশ্ন উঠছে।

এলাকার বাসিন্দাদের কথায় কখনও পিকআপ ভ্যানে কখনও ট্রাকে চাপিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সীমান্তে। সুযোগ বুঝে তা পাচার করে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। এমনই অভিযোগ রয়েছে বহু বছর ধরেই। বুধবার রাতেই মাথাভাঙা-ময়নাগুড়ির রাজ্য সড়কের কলেজ মোড় থেকে তিনটি পিকআপ ভ্যান বোঝাই গাড়ি আটক করে পুলিশ। কিন্তু চালক সহ কয়েক জন পালিয়ে যায়। ওই রাতেই পুটিমারী-ফুলেশ্বরীতে গরু চুরির অভিযোগে ২ জনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পিকআপভ্যানটিকে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।

পর পর এমন ঘটনায় নড়েচড়ে পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী। নজরদারি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকরও গোটা ঘটনার দিকে নজর রেখেছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সারা বছর ধরেই নজরদারি চলে। এই সময় একাধিক অভিযোগ উঠে আসায় নজরদাড়ি বাড়ানো হয়েছে। ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে।” বিএসএফের কোচবিহার রেঞ্জের এক আধিকারিকও জানান, সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে। সীমান্তের কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, “সন্ধের পর থেকে পাচারকারীদের দাপট বেড়ে যায়। জওয়ানদের গতিবিধির উপরে নজর রাখে পাচারকারীরা। রাতে বাইরে বেরোনো আতঙ্কের বিষয়। আমরা সাধারণ মানুষ খুব অসুবিধের মধ্যে থাকি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এপার থেকে ওপারে গরু নিয়ে যেতে পারলেও অন্তত কুড়ি থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাভ হয় পাচারকারীদের। কোচবিহার জেলার একটি বড় অংশ বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঘেরা। দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা থেকে তুফানগঞ্জেও রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। সেই সীমান্তপথের একটি অংশ নদীপথ। সেই অংশে কাঁটাতার নেই। আবার আরেকটি অংশে এমনিতেই কাঁটাতার নেই। কাঁটাতারবিহীন পথ ধরেই সাধারণত পাচার হয় বলে অভিযোগ। দিনের বেলা গোপন জায়গায় গরু নিয়ে যাওয়া রাখা হয়। রাতে পাচারকারীদের টিম নেমে যায় ময়দানে। বিএসএফ জওয়ানদের গতিবিধির উপরে নজর রাখে তারা। এর পরেই গরু পাঠিয়ে দেয় ওপারে। সেখানেও থাকে পাচারকারীরা। গরু নিয়ে চম্পট দেয় তারা। কুয়াশা বেশি করে পড়লে সেক্ষেত্রে বিএসএফ জওয়ানদের চোখ ফাঁকি দিতে সুবিধে হয় পাচারকারী দলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Cooch Behar Cattle Smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE