প্রতি বছর বিএড পড়তে আসেন ১৬০০ ছাত্রছাত্রী। কিন্তু বিএড শেষ করে এমএড পড়ার সুযোগ খুব বেশি পড়ুয়া পান না। কারণ, উত্তরবঙ্গে সব মিলিয়ে সর্বাধিক ৫০ জন ছাত্রছাত্রী এই কোর্স করার সুযোগ পায়। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতরে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি, সরকার পোষিত এবং বেসরকারি মিলিয়ে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাঁচ জেলায় মোট বিএড কলেজ আছে ১৬টি।
প্রতিটি কলেজে ১০০ জন করে মোট ১৬০০ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রতি শিক্ষাবর্ষে কলেজগুলিতে পড়তে পারেন। অথচ পাঁচ জেলা মিলিয়ে এমএড পড়ানো হয় মাত্র একটি বেসরকারি কলেজে। একটি শিক্ষাবর্ষে সেখানে সর্বাধিক ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়ার সুযোগ পান। পর্যাপ্ত সংখ্যায় কলেজ না থাকায় জেলাগুলির বহু ছাত্র-ছাত্রী এমএড পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেই দাবি সব মহলে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ ও কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আধিকারিকদের একটা বড় অংশ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার বলেন, ‘‘এমএড খুবই গুরুত্বপূর্ণ কোর্স। বহু চাকরির ক্ষেত্রেও ওই কোর্স দরকার। এটা ঠিক যে পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে উত্তরবঙ্গে এমএড পড়ার ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। অনেক ছাত্র-ছাত্রী চাইলেও কলেজের অভাবে পড়তে পারছে না। আমরা ক্যাম্পাসে এমএড পড়ানোর পরিকল্পনা করেছি।
পরিকাঠামো তৈরির কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করা হবে।’’ পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমএড-এর জন্য আরও কলেজ প্রয়োজন। বিএড, এমএড-র জন্য রাজ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। রাজ্য সরকার ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’
যে কলেজে এমএড পড়ানো হয় সেটি আলিপুরদুয়ার জেলার ভাটিবাড়ি এলাকায় অবস্থিত। উত্তরবঙ্গ বা পঞ্চানন বর্মা দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাওই এমএড পড়ান হয় না। শিলিগুড়ির একটি কলেজের বিএড-র ছাত্রী সোমদত্তা মজুমদার বলেন, ‘‘একটি মাত্র কলেজ থাকায় সেখানে সুযোগ পাওয়া নিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। অন্য কোথায় এমএড পড়ান হয় তার খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছি।’’ উত্তরবঙ্গ থেকে অনেকেই এমএড পড়ার জন্য সিকিমে যান। সিকিম থেকে এমএড পড়েছেন কোচবিহারের সুজাতা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সিকিমে থাকা, পড়া মিলিয়ে মোটা টাকা খরচ হয়। সকলের পক্ষে এত খরচ করে বাইরে গিয়ে পড়া সম্ভব নয়। তাই উত্তরবঙ্গেই পর্যাপ্ত সংখ্যক এমএড কলেজ তৈরি অত্যন্ত জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy