Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik 2020

হলে ফোন, ধৃত ছাত্র

রতুয়ারই একটি স্কুলে কার্নিস বেয়ে উঠে টুকলি জোগানের অভিযোগ মঙ্গলবার তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

নজরদারি: পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে তল্লাশি চলছে ইসলামপুরের একটি স্কুলে। ছবি: অভিজিৎ পাল

নজরদারি: পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে তল্লাশি চলছে ইসলামপুরের একটি স্কুলে। ছবি: অভিজিৎ পাল

বাপি মজুমদার
রতুয়া শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০২
Share: Save:

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকেই তল্লাশি করে ঢোকানো হয়েছিল। দাবি, পুলিশ, পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিদর্শকদের সেই কড়া নজর এড়িয়ে মোবাইল নিয়ে ঢুকে পড়ে এক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ বাদে লুকিয়ে সে মোবাইল বারও করে ফেলে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, প্রশ্নপত্রটি দু’পায়ের উপরে রেখে ভিডিয়ো তুলছিল সে। তখনই সে দিকে নজর পড়ে হলের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শকের। পরীক্ষার্থীর হাত থেকে মোবাইল নিয়ে তিনি দেখেন, ততক্ষণে কয়েকটি পাতার ছবি তুলে সে হোয়াটসঅ্যাপে তার দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত খুড়তুতো দাদাকে পাঠিয়েও দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরে জেরায় ছাত্রটি এ কথা কবুলও করে। এর পরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

রতুয়ারই একটি স্কুলে কার্নিস বেয়ে উঠে টুকলি জোগানের অভিযোগ মঙ্গলবার তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পরে এ দিন আরও এক জনকে মোবাইল-সহ ক্লাসঘর থেকে ধরা হল। এর ফলে এই এলাকায় নজরদারি কেমন হচ্ছে, তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন রতুয়ার বৈদ্যনাথপুর হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে ওই পরীক্ষার্থী। সে কী ভাবে সকলের নজর এড়িয়ে মোবাইল নিয়ে ঢুকল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, জেরায় ছেলেটি জানিয়েছে, সে ছবি তুলে দাদাকে পাঠিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদেরও
খোঁজ চলছে।

পরের পর এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে পুরাতন মালদহ, বামনগোলা ব্লক, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুর এলাকা ছাড়া জেলার প্রতিটি ব্লকে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হবে। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অশোককুমার মোদক বলেন, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র বেরিয়ে যাওয়ার মতো অভিযোগ উঠছে। তাই আমরা জেলার বেশ কিছু ব্লকে পরীক্ষার দিনগুলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখছি।’’

এর আগেও বৈদ্যনাথপুর পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল সরবরাহকে ঘিরে গন্ডগোল হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তা যথেষ্ট ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের হলে ঢোকানো হয়। ঢোকার সময় পরীক্ষার্থীদের পকেটে সন্দেহভাজন কিছু রয়েছে মনে হলে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু ধৃত ছাত্র সবার চোখে ধুলো দিয়ে মোবাইল নিয়ে হলে ঢুকে পড়ে। পরে পুলিশি জেরায় ওই ছাত্র মোবাইলে প্রশ্ন তুলে হোয়াটসঅ্যাপে তা দাদাকে পাঠিয়েছে বলে স্বীকার করে। এই অন্যায়ের শাস্তি কী হবে, তা সামসি পুলিশ ফাঁড়িতে বসিয়ে জানতে চান এক পুলিশ অফিসার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তখন সে বলে— ‘‘সেটা আমি কী করে বলব?’’

বৈদ্যনাথপুর হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা ‘ভেনু ইনচার্জ’ দীপক কর্মকার কিছু বলতে চাননি। আর রতুয়া পরীক্ষাকেন্দ্রের সেন্টার সেক্রেটারি সাইমুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা পুলিশকে সব জানিয়েছি। বাকি বিষয় পুলিশের দেখার কথা।’’ চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik 2020 Mobile Phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE