বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তফসিলি জাতি-জনজাতিদের বড় অংশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের থেকে। বিশেষ করে রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভোটাররা ঝুঁকেছেন বিজেপির দিকে। টিম পিকে-র সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, কেন তফসিলি জাতি-জনজাতি এলাকায় ভোট গেল, রাজবংশী অধ্যুষিত এলাকায় কেন পিছিয়ে পড়ল তৃণমূল, সে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তফসিলি জাতি ও জনজাতি, বিশেষ করে রাজবংশীরা কেন তৃণমূল থেকে মুখ ফিরিয়েছে, সে সম্পর্কে জেলা থেকে রিপোর্টও চেয়েছেন মমতা।
তৃণমূল সূত্রেই খবর, এ বার উত্তরবঙ্গে লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে দলের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক লোকসভা কেন্দ্রে তফসিলি জাতি ও জনজাতি বিশেষ করে রাজবংশীদের ভোট গেরুয়া শিবিরের দিকেই গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তৃণমূল নেতারা। সামনে বিধানসবা ভোট আসছে। সে কারণেই এখন বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
মমতা সবাইকে সতর্ক করে জানিয়ে দেন, ভোটে জিতে যাওয়ার পরে গ্রামের মানুষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখছেন না তৃণমূল বিধায়ক-মন্ত্রীরা। শুধু কিছু জনসভা এবং সংবর্ধনায় যোগ দিয়েই কাজ শেষ করা যায় না। বিধায়কদের গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের খোঁজ নিতে বলেন তিনি।
কালিয়াগঞ্জে এ বারে তৃণমূল রাজবংশী সম্প্রদায়ের তপন দেবসিংহকে ভোটে দাঁড় করিয়েছে। তাঁর জন্য দলের উত্তরবঙ্গের রাজবংশী নেতাদের প্রচারে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। ওই বৈঠকে উত্তরবঙ্গের সমস্ত বিধায়ক হাজির ছিলেন। তার বাইরেও কয়েক জন নেতাকে ডাকা হয়।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ নিজে রাজবংশী সম্প্রদায়ের। তবে তিনি বলেন, “এটা আমাদের সাংগঠনিক বৈঠক। সেখানে দলনেত্রী বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। তা বাইরে জানানো যাবে না।”
দলীয় সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি বিধানসভা ধরে ধরে পিকে-র টিম টানা সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই সমীক্ষা থেকেই উঠে এসেছে, যে অঞ্চল রাজবংশী অধ্যুষিত সেখানে ভোট কমে গিয়েছে তৃণমূলের। সে ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষের সঙ্গে বিধায়কদের যোগাযোগ না রাখা, আপদে-বিপদের তাঁদের পাশে না পেয়েই রাজবংশীরা মুখ ফিরিয়েছে বলে মনে করছেন সমীক্ষক দলের সদস্যরা। ওই রিপোর্ট হাতে পেয়েই তৃণমূল নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উত্তরবঙ্গে তফসিলি জাতি-জনজাতি সম্প্রদায়ের একাধিক নেতা বিধায়ক রয়েছেন। তার পরেও কেন এমন হাল, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, “অস্বীকার করা যায় না, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখাতেই একটি অংশ আস্থা রাখতে পারেননি। এখন বারে বারে তাঁদের কাছে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy