মাকে খুনের দায়ে ছ’বছর জেলে ছিলেন বাবা। প্রায় আটমাস আগে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। অভিযোগ, সেই থেকে প্রায়ই মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীকে খুন করে ভালই করেছেন বলে ছেলেদের শোনাতেন। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে তিন ছেলের গোলমাল লেগেই ছিল। সেই গোলমালের জেরেই বাবাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক ছেলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম রঞ্জিত দাস (৫৫)। বাড়ি ইটাহার থানার সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ইন্দ্রান এলাকায়। সোমবার সকালে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রঞ্জিতের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ছেলে রাকেশ পালিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন দুপুরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেছেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মাকে খুনের আক্রোশেই এক ছেলে ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। মৃতের পরিবারের লোকেদের পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত রঞ্জিত মাছের ব্যবসা করতেন। তাঁর তিন ছেলের মধ্যে অভিযুক্ত রাকেশ মেজ। বড় ছেলে তুফান দিল্লিতে দিনমজুরির কাজ করেন। রাকেশও দাদার সঙ্গে দীর্ঘ দিন দিল্লিতে দিনমজুরির কাজ করেছেন। কয়েকমাস আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। ছোটছেলে অজিত ইটাহারে দিনমজুরির কাজ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক বিবাদের জেরে প্রায় সাত বছর আগে রঞ্জিত তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ রঞ্জিতকে গ্রেফতার করে। রায়গঞ্জ জেলা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন রঞ্জিত। তাঁর ছ’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরার পর রঞ্জিতের সঙ্গে ছেলেদের বিবাদ লেগেই থাকত। রবিবার রাতে ছোট ছেলে অজিত বাড়িতে ছিলেন না। অভিযোগ, রঞ্জিত মদ্যপান করে বাড়িতে এসে মেজছেলে রাকেশকে গালাগালি করেন। স্ত্রীকে খুন করে ভাল করেছেন বলে ফের মন্তব্য করেন। রাকেশ প্রতিবাদ করলে দু’জনের মধ্যে মারপিট বেধে যায়। তখনই রাকেশ ইট দিয়ে বাবার মাথায় ও মুখে একাধিক বার আঘাত করেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় রঞ্জিতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
ছোটছেলে অজিতের দাবি, ‘‘বাবা মাকে খুন করেছে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে আমি ও আমার দুই দাদার সঙ্গে বাবার সম্পর্ক ভাল ছিল না। মাকে খুন করা নিয়ে ওই দিন রাতে মেজদার সঙ্গে বাবার গোলমাল হয়। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy