Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Maynaguri

অগ্নিগর্ভ ময়নাগুড়ি

ভোম্বল দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪ ফেব্রুয়ারি। আটদিনের মাথায়, শনিবার মারা যান তিনি।

রোষ: নেতা-মৃত্যুর ঘটনার জেরে অগ্নিগর্ভ চূড়াভাণ্ডার। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি বাড়িতে। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

রোষ: নেতা-মৃত্যুর ঘটনার জেরে অগ্নিগর্ভ চূড়াভাণ্ডার। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি বাড়িতে। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৪
Share: Save:

দুষ্কৃতী হামলার জেরে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারের তৃণমূল বুথ সভাপতি ভোম্বল ঘোষের (৩৪) মৃত্যুর ঘটনায় অশান্ত হয়ে উঠল ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার এলাকা।

ভোম্বল দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪ ফেব্রুয়ারি। আটদিনের মাথায়, শনিবার মারা যান তিনি। রবিবার ভোরে ধরা পড়ে ওই ঘটনার অন্যতম এক অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রের খবর, তাপস রায় নামে ধৃত ওই ব্যক্তি বিজেপি কর্মী।

রবিবার সন্ধের পর ভোম্বলের মৃতদেহ মল্লিকহাটের বাড়িতে পৌঁছনোর পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা ভোম্বলকে আক্রমণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালায় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালায়।

১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ময়নাগুড়ি হুসলুডাঙ্গা বাজারে বিজেপি কর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভোম্বলকে মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। দলের অভিযোগ, এলাকায় রাজনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে বিজেপি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, ওই নেতার মৃত্যুর পর ওই এলাকায় তাদের ১৫ জন কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর চালিয়েছে তৃণমূল। যদিও এই বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে এসপি অভিষেক মোদী জানান।

পুলিশ সূত্রের খবর, ভোম্বলের উপর হামলার ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তেরা গা ঢাকা দেয়। ঘটনার মূল অভিযুক্ত তাপসকে রবিবার ভোররাতে পুলিশ বাংলাদেশ সীমান্ত ছোঁয়া কুচলিবাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে বলে দাবি পুলিশের। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল ধৃত।

জলপাইগুড়ি জেলার এসপি অভিষেক মোদী জানান, ভোম্বল ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় তাপস রায়-সহ ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয় ময়নাগুড়ি থানায়। মূল অভিযুক্ত তাপস। বাকিদের খোঁজ চলছে। ধৃতকে এ দিন দুপুরে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী অনুজা প্রধান জানান, ধৃতকে বিচারক আটদিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। দলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মীদের নৃশংস আক্রমণেই ভোম্বল ঘোষের মৃত্যু হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কখনও ছড়াতে চাই না। সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপির এই ধরনের রক্ত ঝরানো সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরে রাজনৈতিক ভাবেই বিজেপিকে রুখতে দল পথে নামবে।’’ বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ মিথ্যে অভিযোগ এনেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, এ দিন পুলিশকর্তাদের সামনেই তৃণমূলের লোকজন বিজেপি কর্মীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল কর্মীরা এই কাজে যুক্ত নন।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে ত্রিপুরা পুলিশের এক কর্মীও রয়েছেন। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই কর্মীর বাড়ি চূড়াভাণ্ডারের মল্লিকহাটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত সে। ছুটি নিয়ে ত্রিপুরা থেকে বাড়িতে এলেই এই ধরনের রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় সে মদত জোগায়। যদিও বিজেপির দাবি, ত্রিপুরা পুলিশের ওই কর্মী ও তার পরিবারের লোকেরা দলের সক্রিয় সদস্য হলেও বাস্তবে এই ধরনের ঘটনায় কেউই জড়িত নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maynaguri TMC Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE