স্ক্রাব টাইফাসের পর এ বার কি হারপিস সিমপ্লেক্সের আগমন ঘটল আলিপুরদুয়ারে? এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত একাধিক রোগীকে পরীক্ষা করেও, সেই রোগের কারণ খুঁজে না পাওয়ায় এখন সেই সন্দেহই দানা বাঁধছে জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের মনে৷ স্বাস্থ্যকর্তাদের সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই উঠে আসছে হারপিস সিমপ্লেক্সের নাম৷ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হতে জেলা হাসপাতালে ভাইরাস ঘটিত এই রোগের পরীক্ষা শুরু করতে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা৷
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার বাসিন্দারা কেন এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার কয়েকটা কারণ জানা গেলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা অজানা থেকে যাচ্ছে তাদের কাছে৷ আর তার জেরেই এখন নতুন করে সন্দেহের তালিকায় উঠে এসেছে হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের নাম৷
আলিপুরদুয়ার জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামীর কথায়, ‘‘এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষার পর এর কারণ হিসাবে আমাদের জেলায় যেগুলি জানা যায়, সেগুলি হল জাপানি এনসেফ্যালাইটিস, স্ক্রাব টাইফাস বা ডেঙ্গি৷ কিন্তু এর বাইরেও এনসেফ্যালাইটিসের অনেকগুলি কারণ রয়েছে, যেগুলি জানা যায় না৷ তার মধ্যেই একটি হল হারপিস সিমপ্লেক্স৷’’
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এই রোগটি মূলত ভাইরাস ঘটিত রোগ৷ নিবিড় শারীরিক সম্পর্ক থেকে এই রোগ ছড়ানোর সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি থাকে৷ এ ছাড়া এই রোগে আক্রান্ত কোনও রোগীর ব্যবহার করা জিনিস থেকেও অন্যের মধ্যে তা ছড়াতে পারে৷
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হারপিস সিমপ্লেক্সের দুটি ভাগ রয়েছে। টাইপ ওয়ান ও টাইপ টু৷ মূলত চামড়ার মধ্যেই এই ভাইরাসটি আক্রমণ করে৷ একটা দাগের মত হয়ে গিয়ে সেই জায়গাটা জ্বালা করতে থাকে৷ সুবর্ণবাবু জানান, টাইপ টু ভাইরাস সাধারণত নার্ভে আক্রমম করে৷ এবং সেটা অপেক্ষাকৃত মারাত্মক হয়৷
সুবর্ণবাবু বলেন, ‘‘হারপিস ভাইরাস আক্রমণ করলে সাধারণত তার মুখে জলভরা ফোসকা হতে দেখা যায়৷ তবে অনেক সময় সরাসরি নার্ভে গিয়ে বাসা বাঁধে ও নিষ্ক্রিয় অবস্থায় সেখানে থেকে যায়৷ তবে সেই ভাইরাসটি সক্রিয় হয়ে আচমকা মস্তিস্কেও আক্রমণ করতে পারে৷ আর তখনই সেই ব্যক্তির অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস হওয়ার সম্ভবনা থাকে৷’’
কিন্তু আচমকা এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের হারপিস সিমপ্লেক্স পরীক্ষার কথা কেন ভাবছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা? ডেপুটি সিএমওএঈইচ জানান, এই রোগে চিকিৎসা গবেষণায় দেখা গিয়েছে হারপিস সিমপ্লেক্সও এনসেফ্যালাইটিসের একটা কারণ৷ কিন্তু আলিপুরদুয়ারে এই রোগ নির্ণয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই৷ ফলে এই জেলায় এই রোগে আক্রান্ত কারও সন্ধানও মেলেনি৷
বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থার সাহায্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মাঝেমধ্যে এর পরীক্ষা হয়৷ সেখানে কয়েকজনের এই রোগ ধরা পড়ার খবরও রয়েছে৷ কিন্তু বাইরের নমুনার পরীক্ষা সেখানে হয় না৷ তাই জেলা হাসপাতালে এই পরীক্ষার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
সুবর্ণবাবু বলেন, ‘‘হারপিস ভাইরাস আক্রমণ করলেই যে কারও অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস হবে, তা নয়৷ তবে শতকরা দুই-তিনজনের সেই সম্ভাবনা থাকে।’’ সে কারণেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালেই হারপিস সিমপ্লেক্সের পরীক্ষা করা হবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy