অসহায়: দুই মেয়েকে নিয়ে মেখলিগঞ্জের রাস্তায় সবিতা। নিজস্ব চিত্র
মেয়ে হওয়ায় এক মহিলাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শনিবার বিকেলে মেখলিগঞ্জ কদমতলা মোড়ে দুই কন্যাকে নিয়ে বসে কাঁদছিলেন সবিতা বর্মণ। তাঁকে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসেন। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর শ্বশুরবাড়ি যেহেতু কুচলিবাড়ি থানার অধীনে, তাই কুচলিবাড়ি থানায় অভিযোগ জানাতে বলে তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সবিতার শ্বশুরবাড়ি মেখলিগঞ্জের বাগডোকরা-ফুলকাডাবরি পঞ্চায়েত এলাকার পেশকারের স্কুল এলাকায়। তাঁর তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে, চার বছরের বিউটি বর্মণ সবিতার বাপের বাড়ি, ভোটবাড়ি পঞ্চায়েতের গুয়াবাড়িতে থাকে। অন্য দুই মেয়ে তিন বছরের মিনতি ও এক বছরের মালতি তার সঙ্গেই থাকে। সবিতার অভিযোগ, কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় তাঁর উপরে তাঁর স্বামী নিয়মিত অত্যাচার করত। তাঁর কথায়, ‘‘মাঝে মধ্যেই মারধর করা হত। এমনকি বাড়ির অন্য সদস্যরাও মারধর করত। শনিবার মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।’’
কুচলিবাড়ি থানায় যোগাযোগ করা হলে থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা গত বছরের শুরুতেই তার স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। ওই মামলায় তদন্ত করে পুলিশ চার্জশিটও জমা দিয়েছে। এ দিনের ঘটনার জেরে এলাকা জুড়ে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। প্রাক্তন শিক্ষিকা বাবলি মিত্র বলেন, ‘‘সরকারি স্তরে নানাভাবে যখন মহিলাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তখন মেয়ে জন্ম দিয়েছে বলে বধূকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ মেখলিগঞ্জ কলেজের শিক্ষিকা মৌসুমী দে সরকার বলেন, ‘‘আর্থ সামাজিক অবস্থার কারণে ও সচেতনতার অভাবেই এই পরিস্থিতি। সর্বত্র যখন নারীরা এগোচ্ছেন তখন এমন ঘটনা আমাদের অনেকটা পিছিয়ে দেবে। মেয়ে জন্ম দেওয়ার জন্য বধূকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।’’
ওই মহিলার স্বামী মন্টু বর্মণকে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy