Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্বী তুলতেও উৎসাহী জনতা

আসরে নামেন এসিপি অচিন্ত্য গুপ্ত, ভক্তিনগর থানার আইসি অনুপম মজুমদাররা। তার পরে ধীরে ধীরে শপিং মল ফাঁকা করে দেওয়া হয়। কারণ, ধরার সময় ফস্কে গিয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে চিতাবাঘ শপিং মলে ঢুকে পড়লে আর এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটার আশঙ্কা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ১৮:১১
Share: Save:

সবে ‘অ্যাভেঞ্জারস ইনফিনিটি ওয়ার’ দেখে শপিং মলে পিৎজা খেতে বসেছিলেন দিয়া, সৌম্যদীপ, শ্রেয়ারা। ভেবেছিলেন নৈশভোজ সেরেই বেরোবেন। আচমকা ‘বাঘ-বাঘ’ হল্লা শুনে চেয়ার-টেবিল ছেড়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সকলে দল বেঁধে সোজা কার পার্কিংয়ে গিয়ে গাড়ি চালিয়ে রাস্তায়। কিন্তু, বার হওয়ার উপায় নেই। রাস্তায় তখন যানজট। গাড়ি থামিয়ে সকলেই শপিং মলের উল্টো দিকে কোথায় চিতাবাঘ, তা বোঝার চেষ্টা করেন। অন্ধকারের মধ্যেই নিজস্বী নেওয়ার মরিয়া চেষ্টাও দেখা গেল উৎসাহীদের মধ্যে। শেষ অবধি পুলিশ আসরে নেমে সতর্ক করায় ভিড় কমে।

ইতিমধ্যে ব্যাটারি চালিত মাইকে এলাকায় ঘোষণা করে দেওয়া হয়, চিতাবাঘ বার হওয়ায় সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪৪ ধারা সাময়িক ভাবে জারি করা হচ্ছে। তার পরেই ভিড়ে কিছুটা ভাঁটা পড়ে। কিন্তু এক দল তখনও ছবি-ভিডিও তুলে তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে চান! সে সময়ে বনকর্মীরা কয়েক জন প্রায় অনুনয় বিনয় করে লোকজনকে সরানোর চেষ্টা করেন।

আসরে নামেন এসিপি অচিন্ত্য গুপ্ত, ভক্তিনগর থানার আইসি অনুপম মজুমদাররা। তার পরে ধীরে ধীরে শপিং মল ফাঁকা করে দেওয়া হয়। কারণ, ধরার সময় ফস্কে গিয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে চিতাবাঘ শপিং মলে ঢুকে পড়লে আর এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটার আশঙ্কা।

শপিং মলে ছিলেন ভিনরাজ্যের কয়েক জন পর্যটকও। চেন্নাইয়ের ইঞ্জিনিয়র কে সীমাচলমরা খানিকটা ঝুঁকি নিয়েই ছবি তোলার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বললেন, ‘‘শিলিগুড়ির আশপাশে চা বাগান, জঙ্গল আছে জানি। তা বলে শপিং মলের সামনে চিতাবাঘ দেখতে পাব ভাবিনি। সারা জীবন মনে থাকবে।’’

রাত প্রায় ১১টার সময়ে দেখা গেল সেবক রোডে কয়েকশো কৌতুহলীর ভিড় জমেছে। কেউ টর্চ নিয়ে ইতিউতি দেখছেন। কেউ সার্চলাইটের আলো তাক করে ভিডিও তোলার চেষ্টা করছেন।

ইতিমধ্যে বন অফিসার ও পুলিশ কর্তাদের ছোটখাট মিটিংয়ের পরে বনকর্মীরা জাল বিছিয়ে চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য চেষ্টায় নামেন। বন বিভাগের এক কর্তা জানান, শেষ অবধি চিতাবাঘটিকে বন্দি করা যায়নি।

বনদফতরের কর্মী ও আধিকারিকদের অনুমান, সেটি লাগোয়া বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের শালুগাড়ার শাল-সেগুনের বনে ঢুকে পড়বে কিনা, তা জানতে রাত কাবার হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tiger Selfi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE