Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Manipur

‘প্রাণ থাকতে মণিপুরে নয়’ 

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ নভেম্বর সকালে মণিপুরের ইম্ফলের কাছে হাট্টামানা এলাকায় কালিয়াচক ৩ ব্লকের বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের পার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবির শেখের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, সাবিরকে বেধড়ক মারধর করে গুলি করে খুন করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জয়ন্ত সেন 
বৈষ্ণবনগর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৭
Share: Save:

সহকর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনার পরে মণিপুর থেকে ফিরে এলেন বাখরাবাদের চার পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের বক্তব্য, না খেয়ে মরবেন, তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মণিপুরে আর কাজে ফিরে যাবেন না। বাড়িতে ফেরার পরে এখন কী করে সংসার চলবে সেই ভেবেই কূল পাচ্ছেন না কেউ। এ দিকে, গুলিতে মৃত পরিযায়ী শ্রমিক সাবির শেখের স্ত্রী শিউলি খাতুন তাঁর স্বামীর মৃত্যুর যথোপযুক্ত তদন্ত ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন বলে পরিবার সূত্রে খবর।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ নভেম্বর সকালে মণিপুরের ইম্ফলের কাছে হাট্টামানা এলাকায় কালিয়াচক ৩ ব্লকের বাখরাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের পার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবির শেখের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, সাবিরকে বেধড়ক মারধর করে গুলি করে খুন করা হয়েছে। সকাল ৮টা নাগাদ প্রকাশ্যেই সেই ঘটনা ঘটে। সাবির সেখানে ভ্যানে করে ভাঙা লোহার সামগ্রী ফেরি করতেন। জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে বাখরাবাদের পারবৈদ্যনাথপুরেরই সরিফ শেখ, আলিম শেখ, কাইয়ুম শেখ ও তাজিরুল শেখের সঙ্গে মণিপুরে গিয়েছিলেন সাবির। সাবিরের মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহর নিয়ে সরিফ, আলিমরা চার জনই ফিরে এসেছেন।

তাঁদের চোখে-মুখে এখনও আতঙ্ক। সরিফ বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ জন মণিপুরে একই কাজ করতাম। সকালবেলায় যে যার মতো গ্রামে গ্রামে ফেরি করতে বেরিয়ে যেতাম। রাতে এক ঘরেই পাঁচ জন থাকতাম। প্রতিদিন গড়ে ৬০০-৭০০ টাকা রোজগার হত। কিন্তু সাবিরকে যে ভাবে গুলি করে খুন করা হল তার পরে সেখানে থাকা আর নিরাপদ মনে করিনি। এখানে যে কী করে সংসার চালাব তাও জানি না।’’ আর এক শ্রমিক কাইয়ুম শেখ বলেন, ‘‘জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি। না খেয়ে থাকব তবুও ভাল। বেঁচে থাকতে মণিপুরে আর যাব না।’’ তাজিরুল বলেন, ‘‘এলাকায় সে ভাবে কাজ মেলে না বলে মণিপুরে গিয়েছিলাম আমরা। এখন জান বাঁচাতে চলে এসেছি। আর যাব না।’’

এ দিকে, সাবিরের স্ত্রী শিউলি খাতুন শুক্রবার বলেন, ‘‘মণিপুরে মামলার খোঁজখবর কী ভাবে নেব তা বুঝতে পারছি না। স্বামীর খুনের যথোপযুক্ত তদন্তের দাবি জানাতে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি পাঠাব। আমি চাই অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant workers Manipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE