তদন্তে: ফুলবাড়ি পেট্রল পাম্পে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি গৌরব লাল। ছবি: স্বরূপ সরকার
শুক্রবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার। পুলিশ সূত্রের খবর, পেট্রোল পাম্প ডিলারদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে রাতে নজরদারি বাড়াতে বলেছিলেন আইজি। ঘটনাচক্রে, ওই রাতেই পৌনে দশটা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় দু’টি এবং শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় দু’টি পেট্রোল পাম্পে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী।
একটি অ্যাম্বুল্যান্সে চড়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার এলাকায় অবাধে ঘুরে দুষ্কৃতীরা ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, ১১ হাজার টাকার মবিল লুঠ করেছে। একটি পাম্পের অটোমেটেড মেশিনের হার্ড ডিস্ক খুলে নেয়। অভিযোগ, একটি জায়গায় ভয় দেখাতে শূন্যে গুলিও চালিয়েছে তারা। তবে পাম্প কর্মীরা হইচই করায় দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এক রাতে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দুষ্কৃতী হামলার পরে পুলিশের নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পেট্রল পাম্প ডিলার সংগঠনের অনেকেই।
উত্তরবঙ্গ পেট্রল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শ্যামল পালচৌধুরী বলেন, ‘‘বেশিরভাগ পাম্পমালিক ফোন করে আমাদের জানিয়েছেন, এমন হলে রাতে পাম্পে পরিষেবা বন্ধ রাখতে হবে।’’ যদিও উত্তরবঙ্গের আইজি জানান, রাতে পাম্পগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশ সবরকম চেষ্টা করবে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, সাধারণত রাতে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পরীক্ষা করা হয় না। সে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তাই ফাঁসিদেওয়া থেকে শুরু করে ময়নাগুড়ি গিয়ে ফের একই পথে ফেরার সাহস দেখিয়েছে তারা। পুলিশের সন্দেহ, উত্তর দিনাজপুর হয়ে বিহারে ঢুকে পড়েছে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানায়, প্রথম ঘটনাটি ঘটে ফাঁসিদেওয়া থানা এলাকায়। রাত সাড়ে নটা নাগাদ ফুলবাড়ি-ঘোষপুকুর বাইপাসের ধারে কেনাজোতের পাম্পের সামনে দাঁড়ায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। দুষ্কৃতীরা পাম্পে ঢুকলে কর্মীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা একজোট হয়ে হইচই জুড়লে দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি ছুড়ে পালায়। কর্মীরা পুলিশকে খবর দেন।
এর পরে রাত ময়নাগুড়ির ছোট ভান্ডানি এলাকার একটি পাম্পে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। সেখানে একটি হুইল রেঞ্জ দিয়ে এক পাম্পকর্মীকে জখম করে তারা। তাঁর পেটে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে পাম্পের দুই কর্মীকেই শৌচাগারে ঢুকিয়ে আটকে দেওয়া হয়। পাম্প কর্তৃপক্ষের দাবি, টাকা লুঠের সঙ্গে সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও খুলে নেয় দুষ্কৃতীরা।
এর পরে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় আমবাড়ি ফাঁড়ি এলাকার বন্ধুনগরের একটি পেট্রল পাম্পে। রাত দুটো নাগাদ দুষ্কৃতীরা সেখানে পাম্পকর্মীকে পিস্তল দেখিয়ে মারধর করে ৬০ হাজার টাকা লুঠ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিসিটিভির হার্ড ডিস্ক ভেবে পাম্পের অটোমেডেট মেশিনটি নিয়ে চলে যায় তারা। রাত পৌনে তিনটেয় দুষ্কৃতীরা হানা দেয় ফুলবাড়ির পাম্পে। সেখান থেকে ৬০ হাজার টাকা লুঠ করে তারা। পাম্প মালিক বলেন, ‘‘রাতে তেল বেচি না। অ্যাম্বুল্যান্স দেখে মানবিকতার খাতিরে কর্মীরা বেরোন। তার পর এই ঘটনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy