Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
নওদা-যদুপুর

সদস্যরা আসেননি, অনাস্থা বাতিল

দিনভরই যেন ছিল অঘোষিত বনধ। মঙ্গলবার মালদহের কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের চেহারা দেখে এমনই মনে হয়েছে এলাকাবাসীর। দোকানপাট যেমন ছিল বন্ধ, তেমনি রাস্তাঘাটও ছিল একেবারে সুনসান। এলাকা জুড়ে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ০২:২১
Share: Save:

দিনভরই যেন ছিল অঘোষিত বনধ। মঙ্গলবার মালদহের কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের চেহারা দেখে এমনই মনে হয়েছে এলাকাবাসীর। দোকানপাট যেমন ছিল বন্ধ, তেমনি রাস্তাঘাটও ছিল একেবারে সুনসান। এলাকা জুড়ে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনাস্থা ভোট নির্ধারিত ছিল এ দিন। কিন্তু কোনও পঞ্চায়েত সদস্য না আসায় এ দিন ভোট বাতিল করা হয়।

ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান ফারহানা বিবির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। তৃণমূলের অন্দরের খবর, ওই এলাকার দুই যুযুধান গোষ্ঠী বকুল শেখ ও জাকির শেখের মধ্যে কার হাতে কর্তৃত্ব থাকবে তা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই আনা হয়েছিল অনাস্থা। তবে শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েতের রাশ নিজের হাতেই রেখেছেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বকুল শেখ। পঞ্চায়েত সদস্যরা গরহাজির থাকায় প্রধান পদে থাকলেন বকুল শেখের ভ্রাতৃবধূ ফারহানা বিবি। দিনের শেষে কালিয়াচকের যুগ্ম বিডিও তাপস কুমার রায় বলেন, ‘‘এ দিন নওদা যদুপুরে অনাস্থা ভোট ছিল। আমাদের তরফ থেকে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে একজনও সদস্য অনাস্থা ভোটে হাজির হননি। ফলে এ দিনের এই অনাস্থা ভোট বাতিল করা হয়। আগামীতে কী হবে তা পঞ্চায়েত আইন মেনে ঠিক হবে।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ মার্চ প্রধানের অপসারণ চেয়ে ব্লক প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিলেন দলেরই ১১জন পঞ্চায়েত সদস্য। প্রত্যেকেই জাকির ঘনিষ্ঠ বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নিয়মানুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে আস্থা প্রমাণ করতে হয় প্রধানকে। তবে প্রধান আস্থা প্রমাণ না করায় প্রশাসন থেকে এ দিন অনাস্থা ভোট ডাকা হয়। এ দিন সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্যদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে জাকির শেখ ও তাঁর পঞ্চায়েত সদস্যরা হাজির হননি।

এই অনাস্থা ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই তেতে উঠছিল এলাকা। এ দিনও অশান্তির আশঙ্কা করছিলেন গ্রামবাসীরা। তবে বিশাল পুলিশ বাহিনী থাকায় দুই শিবিরের দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস করতে পারেনি বলে মনে করছেন তাঁরা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোলমাল এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। আমরা বকুল এবং জাকির দুজনকেই গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩টি আসন রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বকুল শেখের নেতৃত্বে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সব ক’টি আসনেই জয়ী হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। পঞ্চায়েত প্রধান হন বকুল শেখের ভ্রাতৃবধূ ফারহানা বিবি। তারপরেই প্রধান পদ নিয়েই তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। নওদা যদুপুরের তৃণমূল নেতা জাকির শেখ দলের টিকিটে জয়ী হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হন। তিনিও প্রধান পদের দাবিদার ছিলেন। তবে বকুলের দাপটে প্রধান হতে পারেননি জাকির শেখ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘ওই অঞ্চলের দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mistrust TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE