রসগোল্লার জিআই রেজিস্ট্রেশন পেতেই মন্ডার পেটেন্টের দাবি জোরালো হয়েছে কোচবিহারে। মিষ্টিপ্রেমীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও ওই ইস্যুতে সরব হয়েছেন।
মিষ্টি গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, মন্ডার ইতিহাস প্রায় দু’শো বছরের পুরনো। অবিভক্ত বাংলার মুক্তাগাছায় প্রথম মন্ডা তৈরি হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা গোপালচন্দ্র পাল স্বপ্নাদেশ পেয়ে ওই মন্ডা তৈরি করেন। সেই মন্ডা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন যতীন্দ্রমোহন দে। দেশভাগের পর যিনি কোচবিহারের মাথাভাঙার প্রেমেরডাঙায় চলে আসেন। প্রয়াত যতীন্দ্রবাবুর উত্তরসূরীদের দাবি,অবিভক্ত বাংলার মুক্তাগাছায় যে ভাবে শিখেছিলেন সে ভাবেই কোচবিহারেই মন্ডা তৈরি শুরু করেন তিনি। পরে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
জেলায় মন্ডা জনপ্রিয় হয় যার হাত ধরে সেই যতীন্দ্রবাবুর নাতি তরুণ ধর বলেন, “ মিষ্টির জগতে কোচবিহারের মন্ডার আলাদা খ্যাতি রয়েছে। এটারও স্বতন্ত্র স্বীকৃতি বা পেটেন্ট পাওয়া দরকার।” তাঁর দাবি, এই রাজ্যে কোচবিহারেই প্রথম মন্ডা বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হয়েছে। তাই কোচবিহারের ওই স্বীকৃতি প্রাপ্য। রাজ্য মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সম্পাদক বাপ্পা বণিক বলেন, “যখন প্রথম মন্ডা তৈরি হয় তখনও দেশভাগ হয়নি। জেলার এক বাসিন্দাই ওই কারখানার কারিগর ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই কোচবিহারের মন্ডা জনপ্রিয় হয়। তাই ওই মন্ডার স্বীকৃতি চেয়ে আমাদের সাংগঠন সরব হবে।”
আরও পড়ুন: মান বজায় রাখাই নয়া যুদ্ধ
কেমন ভাবে তৈরি হয় মন্ডা?
মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুধ থেকে প্রথমে ছানা তৈরি হয়। পরে চিনি ও শীতের সময় খেজুর গুড় মিশিয়ে বিশেষভাবে পাক দেওয়া হয়। পরে কারিগররা ওই পাক সন্দেশের মত করে মন্ডা তৈরি করেন। প্রেমেরডাঙার মন্ডা আমেরিকা, সুইজারল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশেও পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকেও অনেকে ওই মন্ডা নিয়ে যান। তরুণবাবু বলেন, ‘‘মায়ের বাবা ছিলেন যতীন্দ্রমোহন দে। তিনি যে ভাবে শিখিয়েছিলেন তা মেনেই আমি মন্ডা করছি। ওই রেসিপি কাউকে দেখাই না। দরজা বন্ধ করে তা তৈরি করা হয়। এখন প্রতিদিন গড়ে ৮ কেজি ছানা দিয়ে ছোট, বড় আকারের শ’ তিনেক মন্ডা তৈরি করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy