Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মা ফিরলেন, শিশু নিখোঁজ

মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি যাওয়ার গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কোলের বাচ্চাকে হারিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন মা সোমা সরকার।

ক্ষোভ: শিশু চুরির ঘটনার প্রতিবাদে শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ শিশুর আত্মীয়দের। বুধবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ক্ষোভ: শিশু চুরির ঘটনার প্রতিবাদে শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ শিশুর আত্মীয়দের। বুধবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

দিনভর হাসপাতালে বিক্ষোভ। সন্ধ্যা থেকে চলল আর এক নাটক। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ধরা পড়েনি চোরও।

মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি যাওয়ার গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কোলের বাচ্চাকে হারিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন মা সোমা সরকার। বুধবার বিকেলের পর আচমকাই সবার অজান্তে ছেলেকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এ দিন রাত ৯টা নাগাদ সোমা দেবীর স্বামী সুশান্ত বলেন, ‘‘ছেলের শোকে পাগলের মতো করছে ও। সন্ধ্যার পরে থানায় যাচ্ছি বলে বেরিয়ে গিয়েছে। আমরা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি।’’

শেষ অবধি রাতেই মায়ের খোঁজ মেলে। যে মহিলা শিশু চুরি করেছেন বলে অভিযোগ, খোঁজ মেলে তাঁরও। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া মাঝাবাড়ির বাসিন্দা। স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী সঙ্গে থাকেন না। স্থানীয়রাই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই তিনি ধুপগুড়ির দিকে পালিয়েছেন।

এ দিন সকালে শিশুটির আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডলের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতালের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হাসপাতালে কে ঢুকছে কে বার হচ্ছে সে ব্যাপারে সঠিক নজরদারি হয় না। সম্প্রতি প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে একটি সদ্যোজাত শিশু হারিয়ে গিয়েছিল। ঘণ্টাখানেক তোলপাড়ের পর দেখা গিয়েছিল, শিশুটির এক আত্মীয় তাকে বাড়ি নিয়ে চলে গিয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, কী ধরণের নজরদারি হয়। পরে মেয়র পারিষদ পরিমল ভৌমিক, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সদস্যরাও সুপারের সঙ্গে দেখা করে নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘পরিবারটিরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। আমরা পুলিশকে সবরকম সাহায্য করছি। নজরদারি তো বটেই সিসিটিভির বিষয়টিও দেখা হবে।’’ আর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘মহিলাকে চিহ্নিত করে খুঁজে বার করতে সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোরী জানিয়েছে, ঝংকার মোড় থেকে মাটিগাড়া যাওয়ার তুম্বাজোতের আগে সেতুর কাছে ওই মহিলাকে দেখেছে। সে বলে, ‘‘আমার চেনা লেগেছে। আবার দেখলে চিনব।’’

কাছারি রোডের ঘুগনির দোকানদার জয়সিংহ রায়, টোটো চালক সুরজিৎ মণ্ডল জানান, কিশোরী ঘুগনি খাচ্ছিল। সেই সময় মহিলা বাচ্চাটাকে নিয়ে কোর্টের দিকেই যায়। পুলিশের খাতায় নাম থাকা মহিলা, শিশু পাচারকারীদের সম্পর্কেও খোঁজখবর শুরু হয়। সোশ্যাল সাইটেও অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New born stolen Siliguri District Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE