অসম-ভূটান সীমান্তের কুমারগ্রাম ব্লকের বারবিশায় আরও একটি নতুন থানা হচ্ছে। সম্প্রতি বারবিশার অসম রোডে জমি অধিগ্রহণ করে থানা বানানোর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ।
সরকারি ভাবে প্রায় এক বছর আগে বারবিশায় পূর্ণাঙ্গ থানা স্থাপনের কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। জমির সমস্যা মেটাতে এগিয়ে আসে বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বারবিশা থানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা। বারবিশা অসম রোড়ের পাশে ৩৩ লক্ষ টাকা দিয়ে দুই বিঘা জমি কেনে সমিতি। কিন্তু এরপরেও থানা না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ দেখা দিচ্ছিল। শুক্রবার বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির হলঘরে অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ওই জমির কাগজপত্র পুলিশ সুপারের হাতে তুলে দেন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথন বলেন, “বারবিশায় থানার ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে দুই বিঘা জমি আমাদের দেওয়া হয়েছে। থানা তৈরির বিষয়ে অনেক কাজ এগিয়ে গিয়েছে। সরকারি সামান্য কিছু প্রক্রিয়া এখনও বাকি রয়েছে। দ্রুত ভবন তৈরির কাজ শুরু করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
নয়ের দশকে কুমারগ্রাম থেকে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের আন্দোলন শুরু হয়। কেএলও জঙ্গি গোষ্ঠী অপহরণ, খুন ও বিস্ফোরণ-সহ বেশ কিছু নাশকতা চালায় কুমারগ্রাম জুড়ে। অসমের জঙ্গি গোষ্ঠীর লোকজন উত্তরবঙ্গে আসা-যাওয়া শুরু করে। কিন্তু ছোট একটি পুলিশ আউট পোস্ট ছাড়া কিছু ছিল না এলাকায়। সেই সময় থেকেই অসম ও ভুটান সীমানার বারবিশায় থানা করার দাবিতে সরব হন বাসিন্দারা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবিপত্র পাঠানো হয়। বাসিন্দাদের বক্তব্য, বারবিশা-সহ গোটা এলাকা জঙ্গি উপদ্রুত হলেও ছোট একটি পুলিশ ফাঁড়ি ভরসা তাঁদের। হাতে গোণা কয়েকজন পুলিশকর্মী দিয়ে চলছে সেই ফাঁড়ি।
বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা জানান, ২০০৬ সালে জঙ্গি মোকাবিলায় অসম ও ভুটান সীমান্তের বারবিশা থানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। বিধানসভায় সেই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু বাম আমলে কাজ আর হয়নি। তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবিশায় পূর্ণাঙ্গ থানা স্থাপনের নির্দেশ দেন। কার্তিকবাবু বলেন, ‘‘থানার ভবন নির্মাণের কাজ যাতে না আটকায় তার জন্য দুই বিঘা জমি কিনে দিয়েছি আমরা। এবার যত তাড়াতাড়ি কাজ হয় ততই ভাল।’’
নতুন থানা তৈরির কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলিও। আরএসপি-র কুমারগ্রাম জোনাল সম্পাদক দীপক দাস বলেন, ‘‘থানা স্থাপনের বিষয়টি যাতে জমি অধিগ্রহণ এবং ঘোষণাতে আটকে না থাকে সেটা দেখতে হবে।’’
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাম আমলে উত্তরবঙ্গকে রীতিমতো বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ জুড়ে উন্নয়নের জোয়ার এনেছেন। আলিপুরদুয়ারকে জেলায় উন্নীত করে মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ করেছেন। বারবিশা থানা স্থাপন সেই উন্নয়নের একটি অঙ্গ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy