ছবি এপি
জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এর মধ্যেই একশো ছাড়িয়েছে। আর এই আক্রান্তরা সকলেই ভিন্রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক। যেভাবে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যাটা বাড়ছে তাতে সংক্রমণ কোথায় গিয়ে থামবে, কেউ জানে না। এ অবস্থায় সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে সব নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখে এত জনের চিকিৎসা কী ভাবে হবে, সেটাই বড় চিন্তার বিষয়, বলছে প্রশাসন। পরিস্থিতি সামলাতে তাই কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
প্রশাসন সূত্রে খবর, অতিমাত্রায় সংক্রমণ ছড়ানো রাজ্য, যেমন, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, এবং তামিলনাডু থেকে আসা শ্রমিকদের সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা হবে। প্রতি পঞ্চায়েতে একটি করে সরকারি কোয়রান্টিন শিবির করা হবে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। স্কুল বাড়িগুলিকে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। আর আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণ করবেন ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা।
কিন্তু এই প্রচুর সংখ্যক আক্রান্তের চিকিৎসা কী ভাবে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। জেলায় একমাত্র কোভিড হাসপাতাল রয়েছে রায়গঞ্জে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলায় কোভিড হাসপাতালের পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে কোভিড কেয়ার হাসপাতাল। পাঞ্জিপাড়া ও হেমতাবাদে একটি করে কোভিড কেয়ার হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, এই কেয়ার হাসপাতালগুলিতে উপসর্গহীন কোভিড পজ়িটিভ রোগীদের রাখা হবে। প্রতিটি ব্লকে একটি করে কোভিড কেয়ার হাসপাতাল খোলার বিষয়েও কথা হয়েছে বলে দফতর সূত্রে খবর।
দরিদ্র শ্রমিকদের এক চিলতে ঘরে জায়গা না হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দূরত্ববিধি মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না। আর তাই সুস্থ হওয়ার জন্য হোম কোয়রান্টিন থাকতে বললেও তাতে কাজের কাজ কতটা হচ্ছে বা সংক্রমণ কতটা নিয়ন্ত্রণে থাকছে তা নিয়েই প্রশ্ন ছিলই। একে ‘সোনার পাথরবাটি’ বলেও কটাক্ষ করেন অনেকেই। তার উপর হাটবাজারে এই শ্রমিকদের যাতায়াত বা পাড়াপড়শির সঙ্গে মেলামেশা—স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগ বাড়িয়েছিল। আর আশঙ্কা সত্যি করেই দিন পনেরোর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা পার করেছে একশোর। কিছু বাসিন্দা আবার বলছেন, ‘‘যে শ্রমিকের খাবার জোগাড় করারই সামর্থ্য নেই, দূরত্ব বজায় রেখে হোম কোয়রান্টিনে থাকার মতো বাড়ি তাঁর থাকবে, এটা ভাবাটাই তো বিলাসিতা।’’
গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানিও বলছেন, ‘‘প্রতিদিন শয়ে শয়ে শ্রমিক ঘরে ফিরছেন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। আর অধিকাংশ শ্রমিকের ঘরেই সব নিষেধাজ্ঞা মেনে থাকার মতো অবস্থা নেই। তাই শিবিরের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy