ভরসা: ইলিশের পসরা। নিজস্ব চিত্র
ইলিশের যে পদই হোক, তার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চান না প্রায় কোনও বাঙালি। কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে পাতে ইলিশ রাখতে চান প্রায় সকলেই। এ বার উত্তরের বহু বাঙালির হেঁশেলেও দেখা মিলেছে রূপোলি ইলিশের। পাঁচশো গ্রাম থেকে কেজিখানেকের বেশি-প্রায় সব ধরনের ইলিশেরই দেখা মিলেছে উত্তরের একাধিক বাজারে।
কিন্তু মাছ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের ইলিশ বা ডায়মন্ডহারবার, নামখানার ইলিশের ভাঁটা রয়েছে এ বছরে। সেখানে বাজার জাঁকিয়ে বসেছে ওড়িশা, মায়ানমারের ইলিশ। পাওয়া গিয়েছে গুজরাত-মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী এলাকার ইলিশও। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে অসমের ব্রক্ষ্মপুত্রের ইলিশও।
শিলিগুড়ি পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বার রাজ্যের ইলিশ কম এসেছে। বাংলাদেশের ইলিশ লুকিয়ে-চুরিয়ে কিছুটা আসে। তবে তার দাম আঁকাশছোয়া। সেখানে ভিন্ রাজ্যের ইলিশ আকারে ছোট, দাম কম। ফলে কদরও বাড়ছে।’’ শহরের বিধান মার্কেট, সুভাষপল্লি, হায়দারপাড়া, গেটবাজার বা চম্পাসারির মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সোমবার বিভিন্ন বাজারে ৪৮০ টাকা থেকে বারশো টাকা প্রতি কেজি পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি হয়েছে। সেখানে রাজ্যের বা পদ্মার ইলিশের দর ছিল দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা প্রতি কেজি। ভাঁইফোটা বাজারে রেকর্ড দরে বিক্রি হয়েছে কিছু রাজ্যের ইলিশ।
ভ্রমণ লেখক তথা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যকে প্রায়দিনই সাতসকালে শহরের মাছ বাজারে মোড়া পেতে মাছ কিনতে দেখেন অনেকেই। তাঁর কথায়, ‘‘ইলিশ মাছের রাজা। এ মাছ ছাড়া বাঙালির মাছের তালিকা হয় না। বাংলাদেশে গিয়ে খেয়াঘাটে কলাপাতা পেতে ইলিশের রসা খেয়ে এসেছি। কিন্তু সে মাছ আর কই! বাইরের ইলিশই ভরসা।’’
পাইকারি বাজারের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ দিন ৫০০ গ্রামের ভিনরাজ্যের ইলিশের দাম ছিল ৪৮০-৫২০ টাকা। এক কেজির আশেপাশে হলেই সেই দাম উঠে যাচ্ছে ১০০০-১৩০০ টাকা প্রতি কেজি। কলকাতা হয়ে ট্রাকে, ট্রেনে ইলিশ শহরে ঢুকছে। কিছু বরফ দিয়ে সোজা চলে আসে বাজারে। কিছু প্রক্রিয়ার পর ‘ফ্রিজারে’ রাখা হয়। মাস তিনেক তা খাবারের উপযোগী থাকে। জেলা মৎস্য দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানান, এ বার ভিন্ রাজ্যের ইলিশ যা এসেছে, তাতে আরও মাসদুয়েক বাঙালির থালা আলো করবে রূপোলি ইলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy