Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আতঙ্ক কাটিয়ে ত্রাণের প্রস্তুতি উত্তরবঙ্গে

ভূমিকম্পের আতঙ্ক সরিয়ে ছন্দে ফিরছে শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গ। সোমবার সন্ধের পরে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নতুন করে কম্পন অনুভূত হয়নি। সোমবার সন্ধের কম্পনের পরে রাতে ফের আতঙ্কে বাসিন্দাদের রাত জাগতে দেখা গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। সোমবার রাতে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনও শেডের নীচে বাসিন্দাদারে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে অবশ্য সে ছবি চোখে পড়েনি।

মিরিকে ভূমিকম্পে ক্ষতি। ছবি: রবিন রাই।

মিরিকে ভূমিকম্পে ক্ষতি। ছবি: রবিন রাই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৬
Share: Save:

ভূমিকম্পের আতঙ্ক সরিয়ে ছন্দে ফিরছে শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গ। সোমবার সন্ধের পরে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নতুন করে কম্পন অনুভূত হয়নি। সোমবার সন্ধের কম্পনের পরে রাতে ফের আতঙ্কে বাসিন্দাদের রাত জাগতে দেখা গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। সোমবার রাতে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনও শেডের নীচে বাসিন্দাদারে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে অবশ্য সে ছবি চোখে পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে, ত্রাণ বিলির কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ভূমিকম্প পীড়িতদের সাহায্যের জন্য হেল্প-লাইন খুলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হেল্প লাইন খোলা হয়েছে উত্তরকন্যাতেও। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ক্ষয়-ক্ষতির সমীক্ষার কাজ শেষ হয়নি।

গত সোমবারের ভূমিকম্পে মিরিকে শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কম্পনের উৎসস্থল ছিল মিরিকের কাছাকাছি। জিটিএ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সমীক্ষায় জানা গিয়েছে অন্তত ১১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৭১টি বাড়ির। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলি করা হয়েছে, সেই সঙ্গে নেপালেও ত্রাণ পাঠানোয় জিটিএ উদ্যোগী হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গত রবিবারই ভূমিকম্পের আতঙ্কের জন্য দু’দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জিটিএ। মঙ্গলবার ছুটির মেয়াদকে আরও দু’দিন বাড়িয়ে দিয়েছে জিটিএ। তবে কোথায় কত ক্ষতি হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ হিসেব এখনও প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়নি বলে জানানো হয়েছে।

দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রচনা ভগৎ বলেন, ‘‘এখনও ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত তালিকা এসে পৌঁছয়নি। তবে দার্জিলিং জেলায় অন্তত হাজার খানেক এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। দুর্গতদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।’’ মিরিকের ওকায়তি, নান্দুলাল গাঁও, মুর্মা, পুটুং, সিসনে, আপার টবলঙ এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি ছিল। পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে এ দিন জরুরি বৈঠকে বসেছিল জিটিএ। বৈঠকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠকেই গোর্খা রঙ্গ মঞ্চে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা, নেপালে ত্রাণ পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নেপালে আটকে পড়া বাসিন্দাদের ফেরত আনতেও কন্ট্রোল রুম থেকে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

জিটিএ-এর সভাসদ জ্যোতিকুমার রাই বলেন, ‘‘আগামী তিন দিনের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা হাতে চলে আসবে। তার পরেই ক্ষতিপূরণ বিলি কী ভাবে হবে এবং বাকি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’ জিটিএ-র নির্বাহী সদস্যরা নিজেদের মাইনে থেকে ১০ হাজার টাকা এবং সভাসদরা ৫ হাজার টাকা ত্রাণ তবহিলে জমা দেবেন। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে উত্তরকন্যায় যৌথ ভাবে কন্ট্রোল রুম শুরু হয়েছে এ দিন থেকে। ত্রাণ সামগ্রী জমা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রও খোলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নতুন করে কোনও ভূমিকম্প শিলিগুড়ি থেকে অনুভূত না হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে বাসিন্দাদের। তবে গত শনিবার থেকে প্রতি দিনই একাধিক বার কম্পন অনুভূত হওয়ায় পুরোপুরি আতঙ্ক কাটেনি। যদিও, আগের দিনগুলির মতো মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ির রাস্তা, খোলা জায়গায় বাসিন্দাদের এ দিন রাত জাগতে দেখা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE