উৎসাহী: সবাই মিলে বিশ্বকাপ দেখা। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র
মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের উল্লাস যেন উঠে এল বালুরঘাটের ছোট্ট ক্লাবঘরটিতে। রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই টিভির সামনে থেকে উঠে বাইরে এসে নাচানাচি শুরু করে দিলেন সকলেই। অনেকেই বাজি ফাটানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফ্রান্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! খেলার শেষ বাঁশিতে এটা নিশ্চিত হতেই উৎসবের মেজাজ শহর জুড়ে, ক্লাবে ক্লাবে এবং পাড়ায় পাড়ায়।
উল্টোটাও হতে পারত! ক্রোয়েশিয়া জিতলেও একই উল্লাসের ছবি দেখা যেত। আসলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড ও জার্মানি বিদায় নেওয়ার পর বিশ্বকাপের রংটাই ফিকে হয়েছে বেশির ভাগ ফুটবল রসিকের কাছে। তাই সেমিফাইনালের পর থেকে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা ক্রোয়েশিয়া ও ফান্সের সমর্থক হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেশির ভাগ উৎসাহীদের মধ্যে এই সমর্থনে প্রাণের সাড়া ছিল না। তবু হাজার হোক বিশ্ব ফুটবলের ফাইনাল তো! তাই গোঁড়ামি সরিয়ে চূড়ান্ত পর্বে উৎসবে মাতলেন ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্সের সমর্থকেরাই। শুধু বালুরঘাট নয়, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর বা মালদহের সর্বত্রই একই ছবি দেখা গেল সন্ধে জুড়ে।
উন্মাদনা প্রথমে টের পাওয়া যায় বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, ইংরেজবাজারের মতো শহরের বাজারে। বালুরঘাটে এ দিন মাংসের বাজার হঠাৎ করে চড়া। খোঁজ নিতে জানা গেল, ফাইনাল খেলা উপলক্ষে পাড়ায় পাড়ায় পিকনিকের আয়োজন হয়েছে। তাতেই পাঁঠা, খাসি থেকে মুরগির মাংসের দাম এক লাফে চড়েছে।
বালুরঘাট শহরের দিপালীনগরের শঙ্কর বসাক থেকে চকভবানির সন্তু দাস, রমেন মণ্ডলরা জানালেন, তাঁরা ক্রোয়েশিয়ার দিকে ছিলেন। ক্লাবঘরের বড় টিভির পর্দায় খেলা দেখার পাশাপাশি মাংস-ভাতের পিকনিকও রেখেছিলেন। ফ্রান্স জেতায় মনটা খারাপ। কিন্তু পিকনিক সারারাত ধরে হবে বলে জানালেন তাঁরা। ফ্রান্সের সমর্থক বিশ্বাসপাড়া থেকে বাসস্ট্যান্ড নারায়ণপুর এলাকার যুবকেরা আনন্দে দিশেহারা। সকাল থেকে সদস্যরা চাঁদা তুলে রাতে পিকনিকের আয়োজন করেছেন।
রায়গঞ্জ ফ্রেন্ডস অব দিশা ক্লাবে এক সঙ্গে খেলা দেখেছেন সদস্যরা। ফাইনাল নিয়ে মাতোয়ারা ছিল ইসলামপুর, ডালখোলার মতো এলাকার দেবাশিস দত্ত, ওয়াজির আলমের মতো ফুটবলপ্রেমীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের পাথরঘাটার বাসিন্দা সুরজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আজ ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন করেছিলাম। ওরা হেরে যাওয়ায় খুব মন খারাপ করছে।’’ মহকুমা সদর চাঁচল থেকে শুরু করে ব্লক সদর গাজল, পুরাতন মালদহ, মানিকচক, কালিয়াচক সর্বত্রই উন্মাদনা ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy