প্রতীকী ছবি।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা। পুরাতন মালদহ পুরসভা ভবনে একেবারে নিঝুম পরিবেশ। কাজের দিনেও পুরসভায় ভিড় নেই সাধারণ মানুষের। কার্যত ফাঁকা পুরসভায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে স্লগ ওভারে পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষের ছক্কা হাঁকানোর গল্প। পুরসভার একাংশ কর্মীদের দাবি, শেষ বলে ছয় মেরে ম্যাচ জিতে গেলেন কার্তিক। দলের ১৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৪ জনই অনাস্থা এনেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। তার পরেও পুরপ্রধান পদে থেকে গেলেন কার্তিক। এ দিন রাতে মালদহে পৌঁছন তিনি। এ দিন অবশ্য পুরসভামুখো হননি শাসকদলের কোনও কাউন্সিলরই।
মহানন্দা নদী লাগোয়া পুরাতন মালদহ পুরসভা ভবন। এ দিন নেই ভবনের বাইরে মোটর বাইক পার্কিং-এর হিড়িক। হাতে গোনা বাইক দাঁড়িয়ে সেখানে। ভিতরও একেবারে নিঝুম। বাস্তুকার বিভাগ, পূর্ত বিভাগ, জলকর বিভাগে কর্মীরা ব্যস্ত নিজেদের কাজে। অনেকে আবার চেয়ার টেবিলে বসেই দিচ্ছেন ভাতঘুম। আরও নিঝুম পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের অফিস চত্বর। পুরকর্মীদের একাংশ বলেন, “মাত্র তিন দিন হাওয়া দিচ্ছিল, স্রোত বাড়ছিল মহানন্দায়। আজ মহানন্দা স্রোতহীন। তেমনই অবস্থা পুরসভাতেও।”
গত শুক্রবার কার্তিক ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলেরই ১৪ জন কাউন্সিলর। সেই তালিকায় প্রথম সারিতে ছিলেন উপ-পুরপ্রধান চন্দনা হালদার। এই পুরসভায় ২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। দলবদলের পর পুরসভায় তৃণমূলের সংখ্যা ১৯টি। এই অবস্থায় তৃণমূলের জেলার পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি ও মৌসম নুর বৈঠক করেন বিক্ষুব্ধ এবং কার্তিকের সঙ্গে।
এর পর কলকাতায় বৈঠক ডাকেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই কার্তিক ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন বলে দাবি ঘনিষ্ঠদের। বিক্ষুব্ধ ছ’জনকে নিজের দিকে টেনে নেন কার্তিক। রাজ্য নেতৃত্বের সামনে উল্টো সুর গাইতে থাকেন চন্দনাও। ফলে কার্তিককেই পুরপ্রধানের পদে বহাল রাখে দল। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হবে বলে বিক্ষুব্ধদের আশ্বাস দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। একই সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের অনাস্থা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর বৈশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, “দলকে বলেছি নেতৃত্ব বদল না হলে পুরভোটে তৃণমূলের ফল খারাপ হবে। এর পরে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে নেব।” কার্তিক বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত সব সময়ই মাথা পেত নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy