Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বধূমৃত্যু নিয়ে ধুন্ধুমার, মৃত্যু

বধূকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এই অভিযোগ ঘিরে হাতাহাতি বেঁধে গিয়েছিল দুই পরিবারের মধ্যে। সোমবারের এই গোলমাল থামাতে গেলে পুলিশের উপর মারমুখী হয়ে ওঠেন দুই পরিবারের কয়েকজন।

পরিজন: রেবতী মজুমদারের ছেলে-মেয়ে। নিজস্ব চিত্র

পরিজন: রেবতী মজুমদারের ছেলে-মেয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০২:৪৬
Share: Save:

বধূমৃত্যু নিয়ে তেতে উঠেছিল জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। বধূকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এই অভিযোগ ঘিরে হাতাহাতি বেঁধে গিয়েছিল দুই পরিবারের মধ্যে। সোমবারের এই গোলমাল থামাতে গেলে পুলিশের উপর মারমুখী হয়ে ওঠেন দুই পরিবারের কয়েকজন। সেই গোলমাল থামিয়ে থানায় ফিরে এসেছিলেন এক কনস্টেবল। তার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তিনি। এই ঘটনার শোকের ছায়া নেমে এসেছে জেলা পুলিশ মহলে।

মৃত কনস্টেবলের নাম রেবতী মজুমদার (৫৫)। তাঁর বাড়ি বেলাকোবায়। খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেবতীবাবুর ছেলে-মেয়ে ও পরিজনেরা আসেন। তাঁদের দাবি, কর্মরত অবস্থায় ঠিক কি হয়েছে তার পুরোটা জানাতে হবে। পরিজনদের দাবি, এ দিন বেশ কয়েকবার থানা থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়েছিল তাঁকে, তার ফলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। মৃতের পরিবারের তরফে গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি করা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত এ দিন দুপুরে। গত রবিবার রাতে হলদিবাড়ি থেকে এক অগ্নিদগ্ধ বধূকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখনই হাসপাতালে বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বধূর বাপের বাড়ি জলপাইগুড়ির পাতকাটায়। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার বাপের বাড়ির লোকেরা হাসপাতালে পৌঁছয়। অভিযোগ তাঁরা হাসপাতালে উপস্থিত বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের মারধর করতে শুরু করেন। বাপের বাড়ির সদস্যদের পাল্টা অভিযোগ, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে জানতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাঁদের ওপর চড়াও হয়। হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় পৌঁছয় পুলিশ।

জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পশ্চিম মোবাইল শাখার জিপে কর্মরত ছিলেন রেবতীবাবু। সহকর্মীরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছতেই বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ মারমুখী হয়ে ওঠে। তাঁদের কয়েকজন পুলিশকে জুতো ছুঁড়ে মারার হুমকিও দেয়। সে সময়ই রেবতীবাবু উত্তেজিত হয়ে পড়েন। কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে হাত ধরে টেনে পুলিশের ভ্যানে তোলেন রেবতীবাবু। তিনজনকে কোতোয়ালি থানাতেও নিয়ে আসেন তিনি। এই ঘটনা দুপুর তিনটে নাগাদ। এরপর বিকেল পাঁচটা নাগাদ ফের হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন রেবতীবাবু। সেখানে পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হলেও কিছু পরেই নিথর হয়ে পড়ে রেবতীবাবুর দেহ।

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রেবতীবাবুর মৃত্যু হয়েছে। সহকর্মীদের একজনের বক্তব্য, “গোলমাল থামিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরার পরেই অসুস্থ বোধ করছিলেন তিনি। ফের হাসপাতালে না গেলেই ভাল হত। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE