জখম পুলিশ ও অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে । নিজস্ব চিত্র।
দাড়িভিট হাইস্কুলের পড়ুয়াদের অবরোধ ও বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে কেন লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো ও গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অনেকেই। শাসকদলের অনেক নেতাও বিষয়টি মানতে পারছেন না।
এক দল স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীর আন্দোলন সামলাতে পুলিশ-প্রশাসন যে চূড়ান্ত ব্যর্থ, তা নিয়ে বিরোধী দল তথা ছাত্র সংগঠনগুলিও সরব। বিজেপি জেলা নেতৃত্ব শুক্রবার ১২ ঘন্টর বন্ধ ডেকেছেন। এসএফআইয়ের মতো বাম ছাত্র সংগঠনগুলিও জেলা জুড়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে। কেন এমন ঘটল— সেই প্রশ্নের সদুত্তর নেই পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও। জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনাকে বারবার ফোন করা হলে এবং তাঁর মোবাইলে মেসেজ করে জানতে চাওয়া হলেও কোনও উত্তর মেলেনি। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ এই পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি। গুলি চালানো নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মৃত ছাত্র ইসলামপুর আইটিআইয়ের পড়ুয়া। তাঁর পরিবারের দাবি, পিঠে গুলি লেগেছে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষাঙ্গনে পুলিশ আন্দোলন সামলাতে গিয়ে যা করল, তাতে আবার প্রমাণ হয়ে গেল, জেলায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তারা ফের ডাহা ফেল। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা— সব ক্ষেত্রেই তারা দায়িত্বজ্ঞানহীনের পরিচয় দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ও কথা শুনল না: মা
অভিভাবকদের একাংশের দাবি, ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমাল চলছিল গত কয়েক দিন ধরেই। পড়ুয়ারা এখানে কার্যত দু’ভাগ হয়ে যায়। তাদের আন্দোলনকে বাইরে থেকে সমর্থন করেন অভিভাবক ও বাসিন্দাদের একাংশ। তা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েই ছিল। তার মধ্যে এ দিন একপক্ষের দাবি মতো শিক্ষক নিয়োগ করতে গেলে অন্য পক্ষ অবরোধ, আন্দোলন শুরু করে।
এই অবস্থায় পুলিশ এ দিন কেনও আগাম ব্যবস্থা নিল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সকলে।
অভিযোগ, অবরোধ শুরু করার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। যে রাস্তাটি পড়ুয়ারা অবরোধ করেছিল, সেটি গ্রামীণ সড়ক হওয়ায় পুলিশ আন্দোলন তোলার ব্যাপারে গোড়াতে গুরুত্ব দেয়নি বলেই দাবি স্থানীয়দের। সেই সুযোগে আন্দোলনে বহিরাগতদের সামিল করানো হয়। তারাই পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশকে ঘেরাও, পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। কয়েক জন অভিভাবকের কথায়, বহিরাগতদের জন্যই আন্দোলন এতটা হিংসাত্মক জায়গায় চলে যায়। কিন্তু পুলিশ আগাম জানতে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার পরিস্থিতি হওয়ার আগে জলকামান বা দমকল ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দিলে কেউ হতাহত হত না বলে দাবি অভিভাবকদের একাংশের।
এসইউসির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক দুলাল রাজবংশী, বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ একই সুরে দাবি করেন, পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রের মৃত্যু ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ কী পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ করেছে তা দলের তরফে খোঁজ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy