Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তোলা নিলে বহিষ্কার, তোপ নেতার

কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ির বেশ কিছু কলেজে ছাত্রভর্তির সময়ে প্রকাশ্যেই এক শ্রেণির ছাত্র নেতা টাকা দাবি করে আসছে বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০৫:১৬
Share: Save:

কলেজে ভর্তি করানোর নামে টাকা তোলা ছাত্রনেতাদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার (কিষাণ) কল্যাণী। শুক্রবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সভায় এমনই নির্দেশ দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের নয়া সভাপতি। এ দিন টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভা হয়েছে জলপাইগুড়ির বান্ধব নাট্য সমাজের অডিটোরিয়ামে। কিষাণবাবু বক্তৃতায় বলেন, “চারদিক থেকে প্রচুর অভিযোগ পাচ্ছি। ভূগোল নিয়ে ভর্তি হতে গেলে টাকা দিতে হচ্ছে, বাংলা নিয়ে পড়তে টাকা দিতে হচ্ছে। একেকটা বিষয়ে একেকরকম দর। এ সব আর চলবে না।” বক্তৃতার মাঝেই পাশে দাঁড়ানো টিএমসিপির জেলা সভাপতি অভিজিত সিংহকে কিষাণবাবু নির্দেশ দেন যে ছাত্রনেতারা টাকা তুলেছে তাদের চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দিতে। এই নির্দেশ শুনে তুমুল হাততালিও পড়ে।

কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ির বেশ কিছু কলেজে ছাত্রভর্তির সময়ে প্রকাশ্যেই এক শ্রেণির ছাত্র নেতা টাকা দাবি করে আসছে বলে অভিযোগ। আনন্দচন্দ্র কলেজে টিএমসিপির ছাত্র সংসদের ছাপানো গেঞ্জি পরে ছাত্র নেতারা টাকা তুলছিল বলে অভিযোগ। স্নাতকে ভূগোল পাইয়ে দিতে সত্তর হাজার টাকা, ইংরেজিতে ষাট হাজার, বাংলায় ৪০ হাজার টাকা দর ছাত্র নেতারাই বেঁধে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দলেও তদন্ত শুরু হয়। দলের রাজ্য নেতৃত্বের মানা থাকলেও কলেজের সোশ্যাল আয়োজনের জন্য কুপন ছাপিয়ে বাজার থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল জলপাইগুড়িতে। চলতি বছরে ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে চলছে। ছাত্র সংসদের সহায়তা কেন্দ্রও কলেজে খুলতে দেওয়া হয়নি। তারপরেও বিভিন্ন কলেজের টিএমসিপি নেতারা নিজেদের ফোন নম্বর ছাপিয়ে লিফলেট বিলি করেছেন। লিফলেটে রয়েছে যে কোনও সহায়তার জন্য ফোন করার অনুরোধ। অভিযোগ, ভর্তি অনলাইনে হলেও সাধারণ পড়ুয়াদের থেকে ছাত্রনেতাদের একাংশের টাকা তোলা বন্ধ করা যায়নি।

এ সব অভিযোগই পৌঁছেছে নয়া জেলা তৃণমূল সভাপতির কানে। সূত্রের খবর, এ দিন বক্তৃতার মাঝে ভর্তির জন্য টাকা তোলার অভিযোগের প্রসঙ্গ আসতেই কিষাণবাবু বলা থামিয়ে দেন। পাশে দাঁড়ানো টিএমসিপি সভাপতিকে নির্দেশ দিতে শুরু করেন। সে সময়ে মাইক চালু থাকায় পুরো নির্দেশই টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকদের কানে যায়। মাইকে শোনা যায় কিষাণবাবু টিএমসিপির জেলা সভাপতিকে বলছেন, “কারা টাকা তুলেছে চিহ্নিত করো। চিহ্নিত করে বের করে দিতে হবে।”

ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় সার্বিক ভাবে ছাত্র সংগঠনের প্রতি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আস্থা হারাচ্ছে বলে মনে করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। কিছু ছাত্রনেতার আচরণে দলের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মানেন কিষাণবাবু। তিনি জেলা সভাপতি হওয়ার পরেই স্বচ্ছ নেতা-কর্মীদের সামনের সারিতে নিয়ে আসবেন বলে দাবি করেছিলেন। ছাত্রদের সভাতে গিয়েও সেই বার্তাই দিলেন তিনি।

সভার শেষে তাঁর মন্তব্য, “দলে দুর্নীতিগ্রস্তদের জায়গা আর নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Money TMCP Admission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE