কলেজে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তেমনই এ বছর থেকে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করল মালদহের ঐতিহ্যবাহী চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশন। মাধমিক উত্তীর্ণরা ওই স্কুলে একাদশে ভর্তি হতে চাইলে তাদের ফর্ম পূরণ করতে হবে অনলাইনে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলও দিয়েছে স্কুল। তা পুরোপুরি সফল হওয়ার পর এবার একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ফর্ম পূরণ থেকে শুরু ভর্তি সব কিছুই অনলাইন পদ্ধতিতে করা হবে বলে স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে। কলেজে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হলেও স্কুলে অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় তারাই রাজ্যে প্রথম চালু করল বলে স্কুলের তরফে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি মফস্সল শহর এলাকার এই স্কুলে গ্রামগঞ্জের মেধাবী পড়ুয়ারাই ভর্তি হয়। অনলাইন পদ্ধতিতে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস চৌধুরী বলেন, ‘‘কলেজে অনলাইনে ভর্তি হচ্ছে। তবে রাজ্যে কোনও স্কুলে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। কিন্তু জেলার মধ্যে সিদ্ধেশ্বরী স্কুলেই প্রথম অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হল। এখন তো ইন্টারনেটের যুগ। ফলে স্কুলের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে পাশাপাশি গ্রামের মেধাবী পড়ুয়ারা যাতে কোনওভাবেই বঞ্চিত না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই স্কুলেও, বিশেষ করে একাদশ-দ্বাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। কেননা পুরনো প্রক্রিয়ায় ভর্তির ক্ষেত্রে রীতিমতো ঝক্কি পোহাতে হয়। ভর্তির কয়েক দিন ধরে স্কুলের যাবতীয় কাজকর্ম লাটে উঠে যায়। পাশাপাশি পড়ুয়াদেরও কম ঝক্কি পোহাতে হয় না। এরই পাশাপাশি এ বছর ওই স্কুলে স্ট্রংরুম করা হয়েছে। ফলে স্কুল চত্বর কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রেখেছেন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া স্কুল চত্বরে কারওরই গলার উপায় নেই। এই অবস্থায় আর দেরি না করে এবার থেকেই অনলাইন ব্যবস্থা চালু করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, এ বার একাদশ শ্রেণিতে ২৯৮ জন ছাত্র পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের ফলাফল অনলাইনেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য স্কুলের নিজস্ব ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। সিএসআইমালদাডটইন-এ ক্লিক করলেই পরীক্ষার্থীরা তাদের ফলাফল পেয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, যারা পাশ করেছে তারা অনলাইনেই রঙিন মার্কশিটও বাইরে থেকে নিতে পারবে। একই ভাবে স্কুলে না এসে তারা অনলাইনেই দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু পাশ করা পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া রয়েছে। ওয়েবসাইট খুলে রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ক্লিক করলেই ভর্তি হতে পারবে তারা।
একই ভাবে মাধ্যমিক উত্তীর্ণদেরও ফর্ম পূরণ থেকে ভর্তি হবে। অনলাইনেই চালানের তিনটি কপি রয়েছে। পড়ুয়াকে তার প্রিন্ট আউট নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে স্কুলের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে হবে। যাদের নেট ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধে রয়েছে তারা ব্যাঙ্কে না গিয়ে সরাসরি স্কুলের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে পারবে। যদিও অনলাইনে ভর্তি হতে গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের সমস্যায় পড়তে হবে কি না, সেই প্রসঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এখন এমন কোনও গ্রাম বা পড়ুয়া নেই, যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে না। তারপরেও সমস্যা হলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসরারুল হক বলেন, ‘‘অনলাইনে কাগজপত্রের কাজকর্ম অনেকটাই কমে যাবে। সময় ও শ্রম বাঁচবে। একাদশে আমরা সফল। এ বার থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ফর্ম পূরণ থেকে ভর্তি, সব কিছুই অনলাইন পদ্ধতিতে করা হবে। কলেজের আগে বরং পড়ুয়াদের এতে আগাম অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy